কিশোরগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় রুবেল মিয়া (২৩) নামে পুলিশের এক কনস্টেবলকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। সোমবার বিকালে কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-১-এ আত্মসমর্পণ করলে বিচারক কিরণ শংকর হালদার তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কনস্টেবল রুবেল কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ঢাকী ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামের রহিছ মিয়ার ছেলে। মামলার আইনজীবী অশোক সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাদী ওই তরুণী (১৭) জানান, মামলার আসামি এবং তারা আত্মীয়। আত্মীয়তার সুবাদে রুবেলের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথাবার্তা হতো। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে তাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি তিনি তার পরিবারকে জানালে মেয়েটির বাবা রুবেলকে উত্ত্যক্ত করতে নিষেধ করেন। একপর্যায়ে রুবেলের বাবা স্থানীয় মুরব্বিদের নিয়ে বিবাহের প্রস্তাব দেন। কিন্তু মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় বিয়েতে রাজি হননি তারা। তখন স্থানীয় মুরব্বিরা এবং তাদের আত্মীয়স্বজন বসে মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলেই তাদের মধ্যে বিয়ে হবে বলে সিদ্ধান্ত দেন। এরপর থেকে রুবেল তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছর ১১ ফেব্রুয়ারি বিকালে রুবেল তাদের বাড়িতে যান। রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে তাদের বাড়ির একটি কক্ষে থেকে যান রুবেল। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে জরুরি কথা আছে বলে রুবেল ডেকে নেন মেয়েটিকে। কথাবার্তার একপর্যায়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন রুবেল। পরদিন সকালে কাউকে কিছু না বলে চলে যান তিনি। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। কিছুদিন পর মেয়েটির পরিবার জানতে পারেন রুবেল করিমগঞ্জ উপজেলার এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন। এরপর এ বিষয়ে থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে গেলে তারা আদালতের আশ্রয় নিতে বলেন। এ ব্যাপারে গত বছর ৪ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রুবেলকে আসামি করে ধর্ষণের মামলা করেন ওই তরুণী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক সুমন মিয়া তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় গত বছর ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। তরুণীর বাবা বলেন, মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাদের মধ্যে বিয়ে হবে এ বিষয়টি নিয়ে স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তি হয় তাদের মধ্যে। চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর রুবেলের বাবা রহিছ উদ্দীন মেয়ের সুখের জন্য ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। চুক্তিপত্র শেষে নগদ দেড় লাখ টাকাও নেন তারা। কিন্তু চুক্তিপত্র করে টাকা নিয়েও মেয়ের সর্বনাশ করেছে আসামিপক্ষ। তিনি রুবেলের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি কনস্টেবল পদে পুলিশের চাকরিতে যোগদান করেন রুবেল। বর্তমানে তিনি ডিএমপি দক্ষিণে কর্মরত।