শুক্রবার, ১৩ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

এবার ফিনল্যান্ডকে হুঁশিয়ারি রাশিয়ার

ইউরোপজুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা

প্রতিদিন ডেস্ক

এবার ফিনল্যান্ডকে হুঁশিয়ারি রাশিয়ার

মস্কো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ফিনল্যান্ড ন্যাটো জোটে যোগ দিলে হেলসিঙ্কি বিশ্বস্ত মধ্যস্থতাকারীর মর্যাদা হারাবে। এ ছাড়া দেশটি ন্যাটো জোটে যোগ দিলে রাশিয়া তার কঠোর জবাব দেবে, ফলে ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তাও আর আগের মতো নিশ্চিত থাকবে না। সূত্র : ভোয়া, রয়টার্স, দ্য ইন্টারসেপ্ট, স্পুটনিক নিউজ।

প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সৌলি নিনিস্তো এবং প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন গতকাল মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়ার পক্ষে যৌথ বিবৃতি দিলে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। রুশ সূত্রগুলো জানিয়েছে, ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগ দিলে রাশিয়া তার ছিটমহল কালিনিনগ্রাদে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে। এ বিষয়ে ফিনিশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের নিরাপত্তা বিশ্লেষক চার্লি স্যালোনিয়াস-পাস্টারনাক বলেছেন, রাশিয়া যদি ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদানের বিষয়ে পারমাণবিক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে এর ফল উল্টো হতে পারে। অর্থাৎ গোটা অঞ্চল জুড়ে ভয়াবহ যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন সংকট তৈরি করেছে। এখন তারা রাশিয়ার সীমান্তে অন্য দেশগুলোতেও উত্তেজনা তৈরি করতে চাইছে। ফিনল্যান্ড বা সুইডেন ন্যাটোর সদস্য হলে পশ্চিমা বাহিনী রাশিয়ার সীমান্তে পৌঁছে যাবে। রাশিয়া কখনই তা হতে দিতে পারে না। সেক্ষেত্রে বাল্টিক অঞ্চলে রাশিয়াকে পরমাণু অস্ত্র মজুদ করতেই হবে। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ফিনল্যান্ড ও সুইডেন যদি ন্যাটোর সদস্য হয়, তাহলে তাদের পরমাণু অস্ত্রের মধ্যে বসবাস করতে হবে। বাল্টিক সাগরে পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করা হবে। তখন খাদ্য সংকট, সামাজিক অস্থিরতার সঙ্গে পরমাণু বোমার হুমকির মধ্যে দিন কাটাতে হবে তাদের। খবরে বলা হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধের আগেই অবশ্য বাল্টিক সাগরে পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করেছে রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধের আগে-পরে ন্যাটোর সদস্য না হলেও সুইডেনে যৌথ সামরিক মহড়াও চালিয়েছে ন্যাটো। শান্তিপূর্ণ দেশ ফিনল্যান্ডকে এভাবেই সামরিকভাবে চাঙা করে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব মিলে গোটা অঞ্চলে একটি বড় যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়ে চলেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ যুদ্ধের পরিসর বা সীমা কতটা হবে, তা এখনই বলা দুরূহ।

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার এই আধিপত্যের লড়াইকে ‘বিশ্বের জন্য ভয়াবহ পরিণতির বার্তা’ হিসেবে দেখছেন মার্কিন দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও ভাষাবিদ নোয়াম চমস্কিও।

খবরে বলা হয়, স্নায়ু যুদ্ধ চলাকালে ফিনল্যান্ড ন্যাটো জোটে  যোগ দেওয়া থেকে বিরত ছিল। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনার পর ফিনল্যান্ড তার অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিয়েছে। ফিনল্যান্ডের  প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী গতকাল যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ন্যাটোর সদস্য হিসেবে ফিনল্যান্ড সামরিক জোটকে শক্তিশালী করবে। কোনো রকমের দেরি না করে জোটের সদস্য পদ পাওয়ার জন্য এখনই আবেদন করা উচিত। উল্লেখ্য, ফিনল্যান্ডের সঙ্গে রাশিয়ার ১৩৪০ কিলোমিটার অভিন্ন সীমান্ত রয়েছে। ন্যাটো জোটে ফিনল্যান্ডের অন্তর্ভুক্তিকে রাশিয়া নিজের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছে। একইভাবে রাশিয়ার নিকট প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেন ন্যাটো  জোটে যোগ দেওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি শুরু করলে সেটি ভালো চোখে দেখেনি রাশিয়া। ফল হিসেবে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালিয়েছে। এ কারণে বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই সীমান্তবর্তী দেশ সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড যদি এবার ন্যাটো জোটে যোগ দিতে যায়- তাহলে সামরিক সংঘাত শুধু সেখানে নয় গোটা ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

কুয়েতে নার্স প্রকৌশলীসহ দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির দ্বার খুলছে

সর্বশেষ খবর