দিনের আলোতে ওদের কেউ অটোরিকশাচালক, সবজি বিক্রেতা, রং মিস্ত্রি, মুদি দোকানি কিংবা অনলাইনে ফুড ডেলিভারিম্যান। অক্লান্ত পরিশ্রমী হিসেবে তাদের এলাকায় সুনাম। রাতেই চেহারা পাল্টে যায় ওদের। হয়ে ওঠেন দুর্ধর্ষ-ভয়ংকর অপরাধী। টার্গেট হাসিল করতে তাদের হাতও কাঁপে না। এমনই একটি চক্রের ছয় সদস্যকে গত সোমবার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ডিবি তেজগাঁও বিভাগের এডিসি শাহাদত হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. সুজন হাওলাদার, রবিউল আউয়াল ওরফে রবি, মো. বাবু ওরফে জুয়েল, মো. রনি, একরাম আলী ও ইব্রাহিম মিঝি। এ সময় তাদের কাছ থেকে একনলা বন্দুক, ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি সিএনজি অটোরিকশা, চাপাতি, লোহার তৈরি দুটি ছোরা, লোহার রড, পাইপ কাটার রেঞ্জ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, তারা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এরা দিনের বেলায় কাজের আড়ালেই বিভিন্ন বাসাবাড়ি রেকির কাজটি সেরে ফেলেন। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, পেশার আড়ালে পাওয়া তথ্য নিয়ে অস্ত্র হাতে অত্যন্ত সুকৌশলে এ চক্র লুটে নেয় বাসাবাড়িতে থাকা মূল্যবান সামগ্রী। সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও কেরানীগঞ্জসহ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এ ডাকাত চক্রের সন্ধান পায় ডিবি তেজগাঁও বিভাগ। ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, তারা সিএনজি চালানো, অনলাইন ভিত্তিক ফুড ডেলিভারি, রঙের কাজ, মুদি দোকানের কাজ করাসহ বিভিন্ন পেশার আড়ালে বাসা রেকি করে তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর রাতের অন্ধকারে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সেসব বাসায় লুটপাট করে।
সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক ব্যবসায়ীর বাসাসহ সাভারের ধামরাই, কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের কয়েকটি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত এরা। সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানার বছিলা সিটি ডেভেলপার্স লিমিটেড এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়। চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় দুটি ডাকাতি মামলাসহ প্রত্যেকের নামে ৭-৮টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের সদস্যদের সম্পর্কে জানতে পেরেছি, এদের সদস্য সংখ্যা ১৫ থেকে ১৬ জন। চক্রটির মূলহোতা সাদ্দাম হোসেন, তিনি পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।