মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি

উদ্ধার হচ্ছে হাড়, শেষ হয়নি তদন্ত

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

বিএম কনটেইনার ডিপোর একটি পিলারের নিচ থেকে কিছু হাড় উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বিকালে ডিপোর শেডের মাঝখানের একটি পিলার থেকে হাড়গুলো উদ্ধার করা হয়। সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক জানান, ‘গতকাল বিকালে শেডের মাঝখানের একটি পিলারের নিচ থেকে কিছু পোড়া হাড় উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া হাড়গুলোর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। পরে ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর বিস্ফোরণ এবং ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে গঠিত কোনো তদন্ত কমিটিই নির্ধারিত সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। প্রত্যেক তদন্ত কমিটি সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে কর্তৃপক্ষের কাছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম বলেন, ‘কাস্টমস গঠিত তদন্ত কমিটি কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে। কাজ শেষ করতে না পারায় তদন্ত কমিটি ১৫ দিন সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে। আশা করছি বৃদ্ধি হওয়া সময়ের মধ্যেই তদন্তের কাজ শেষ করতে পারবে কমিটি।’

বিভাগীয় কমিশনার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান এবং অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করে বিভিন্ন ল্যাবে পাঠিয়েছি। এখনো আলামত সংগ্রহ করছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে না পারায় আরও পাঁচ কর্মদিবস সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছি। আশা করছি এবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।’

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত কমিটি তদন্তের কাজ শেষ করতে পারেনি। তাই সময় বৃদ্ধি করে তদন্ত কাজ করছে।’

বিএম কনটেইনার ডিপোর প্রধান প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপের জিএম এবং মুখপাত্র শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, ‘বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি এখনো কাজ শেষ করতে পারেনি। তাই তদন্ত প্রতিবেদন দিতে একটু সময় নেওয়া হচ্ছে।’ জানা যায়, বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড এবং বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে ভিন্ন ভিন্ন ছয়টি সংস্থা তদন্ত কমিটি গঠন করে। নির্ধারিত সময়ের পরও আগুনের সূত্রপাত, নেপথ্য কোনো হোতা রয়েছে কি না, ডিপোর কার দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে তা জানতে পারেনি। কনটেইনার ডিপোতে কয় ধরনের রাসায়নিক রয়েছে তাও সুনির্দিষ্ট করে জানতে পারেনি তদন্ত কমিটিগুলো। তাই এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে কমিটিগুলো সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, আইসিডি পরিচালনা করতে হলে আইএসপিএস (ইন্টারন্যাশনাল শিপ অ্যান্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিউরিটি কোড), আইএমডিজি (দ্য ইন্টারন্যাশনাল ম্যারিটাইম ডেঞ্জারাস কোড) মেনে এবং ফায়ার সার্ভিস নির্দেশিত সেফটি সিকিউরিটি প্লান্ট স্থাপন করতে হয়। কিন্তু এসব কিছুই ছিল না বিএম ডিপোতে। সাধারণ কনটেইনার রাখার অনুমতি নিয়ে রাখা হয় রাসায়নিক পদার্থ।

৪ জুন রাতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন ৪৯ জন। আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। আহতরা ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিৎসাধীন। ১৯টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। ১৩ জুন ডিএনএ টেস্টের জন্য অজ্ঞাতদের স্বজনদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর