ফের ঘরে ঘরে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। উপসর্গ থাকলে টেস্ট করালেই আসছে পজিটিভ। গতকাল আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৮৫ জন। যা চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি দেশে এক দিনে ১ হাজার ৯৫১ জন কভিড রোগী শনাক্ত হয়েছিল। মাঝের সময়টায় এই সংখ্যা আর ১৬০০ ছাড়ায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৮৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করে এই নতুন রোগীদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাতে দৈনিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১৮ শতাংশ, যা আগের দিন ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ ছিল। বৃহস্পতিবারের তুলনায় পরীক্ষা বাড়ায় গতকাল শনাক্তের হার কিছুটা কমে এসেছে।
করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের দাপট কমে আসার পর শনাক্তের হার ১ শতাংশের নিচে ছিল বেশ কিছুদিন। দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০-এর নিচেও নেমেছিল। মাঝে ২০ দিন কভিডে কারও মৃত্যু হয়নি। কিন্তু জুন মাসের শুরু থেকে আবারও সংক্রমণ বাড়ছে প্রতিদিন। ১১ সপ্তাহ পর দৈনিক শনাক্ত কভিড রোগীর সংখ্যা গত ১২ জুন আবার ১০০ ছাড়িয়ে যায়। ১০ দিনের মাথায় বুধবার তা হাজার ছাড়ানোর দুদিন পর দেড় হাজারের ঘরও ছাড়াল। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৬২ হাজার ২১৩ জন। গত এক দিনে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যুর খবর আসেনি। এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে মারা গেছেন ২৯ হাজার ১৩৫ জন।গতকাল সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ১৮৫ জন কভিড রোগী। তাদের নিয়ে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৪১৭ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত এক দিনে শনাক্ত ১ হাজার ৬৮৫ জন নতুন রোগীর মধ্যে ১ হাজার ৫১১ জনই ঢাকা মহানগর ও জেলার বাসিন্দা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছে সারা দেশের সব বিভাগে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যক্তি উদ্যোগ, সামাজিক উদ্যোগ এবং সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা সবাই মোটামুটি জানি কীভাবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হয়। সবাই মিলে গুরুত্ব দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে। তিনি আরও বলেন, এ বছরের পর হয়তো করোনা আগের মতো মহামারি আকারে থাকবে না। আমরা যেন শেষ মুহূর্তে বিপদে না পড়ি। সংক্রমণ হার যেন খুব কম থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। করোনা আক্রান্ত হলে ঝুঁকি তো থাকেই। করোনা থেকে সুস্থ হলেও পরবর্তী জটিলতায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। যারা অসংক্রামক ব্যাধি যেমন হৃদরোগ, কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তারা করোনা নিয়ে বিপদে আছেন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হচ্ছে, অনেকে নতুন করে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়েছেন।
অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত না থাকলেও করোনা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ করোনা আক্রান্ত হলে শরীরের অধিকাংশ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।