ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল পেয়ারা পুষ্ঠিগুণে ভরা। আনুমানিক ১০০ বছর আগে ঝালকাঠির কৃর্ত্তিপাশার শতদশকাঠি, ভীমরুলী ও ডুমিরিয়া এবং পার্শ্ববর্তী পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদের (স্বরূপকাঠী) আটঘর ও কুড়িয়ানা গ্রামজুড়ে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠে পেয়ারা বাগান। এ বাগান ঘিরে ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী ভিমরুলীর ভাসমান পেয়ারার হাট এখন জমজমাট। মৌসুমজুড়ে ভাসমান পেয়ারার হাটে থাকে দেশি-বিদেশি পর্যটকের আনাগোনা। ক্রেতা-বিক্রেতা ও পাইকারের ভিড়ে বর্তমানে সরগরম ভিমরুলীর ভাসমান পেয়ারার হাট। এবার পেয়ারার ফলনও হয়েছে ভালো। চাষিরা আশাবাদী, করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন তারা।
জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর ভিমরুলীর ভাসমান পেয়ারার হাটে পর্যটক আসা প্রায় বন্ধ ছিল। এ ছাড়া লকডাউনে পরিবহন সংকটে গতবার পেয়ারায় লোকসান দিয়েছেন এখানকার চাষিরা। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। মৌসুমের শুরুতেই জমে উঠেছে হাট। ফলে লাভের মুখ দেখার আশা করছেন পেয়ারার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। পাইকাররা জানান, চাষিদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা মণ দরে পেয়ারা কিনে তারা খুচরা বাজারে বিক্রি করছেন ৬০০ টাকায়। হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, ভিমরুলীর ভাসমান হাটের পেয়ারা যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এখন আর পেয়ারা নষ্ট হচ্ছে না। প্রতিদিন মিনি ট্রাকে পদ্মা সেতু হয়ে পেয়ারা যাচ্ছে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার কৃর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের ভিমরুলী, খাজুরা, ডুমুরিয়া ও বৈরামপুর গ্রাম এবং নবগ্রাম ইউনিয়নের জগদিশপুর, বৈহার, মীরকাঠি ও কাপড়কাঠি গ্রামেই মূলত পেঁয়ারার ফলন বেশি হয়। পেঁয়ারার বড় হাট প্রতিদিন বসে ভিমরুলীর খালে। জানা যায়, সদর উপজেলায় এ বছর ৫৩০ হেক্টর জমিতে পেঁয়ারা চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৮ কোটি টাকা। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতানা আফরোজ বলেন, এবারে পেঁয়ারার উৎপাদন ভালো। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পেঁয়ারা চাষিদের প্রয়োজনীয় সহয়তা দেওয়া হচ্ছে।