মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান শিক্ষক দুই সহকারী নিরুদ্দেশ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গায় দীর্ঘদিন ধরে অননুমোদিত ছুটিতে রয়েছেন দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক। এর মধ্যে একজন রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে, অন্যরা কোথায় আছেন ঠিক করে বলতে পারেননি কেউ। ফলে বিপাকে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে প্রশাসন।

অভিযুক্তরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি সরকারি প্রাথমিক    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিগার সুলতানা, সহকারী শিক্ষক নীনা শাহরিয়ার ও ভিমরুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নীপা শাহরিয়ার। নীনা ও নীপা দুই বোন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজরাহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিগার সুলতানা ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর তিন মাসের চিকিৎসা ছুটির একটি দরখাস্ত বিদ্যালয়ে রেখে যুক্তরাষ্ট্রে যান। দেশে না ফিরেই ২০১৯ সালের ১১ মার্চ থেকে আরও দুই মাসের চিকিৎসা ছুটির একটি দরখাস্ত পাঠান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে। এভাবে দুই বছর নয় মাস আট দিন অননুমোদিত ছুটি কাটিয়ে ২০২১ সালের ২১ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ে যোগ দেন তিনি। এ অবস্থায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার লিখিত পত্রের আলোকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিগার সুলতানার বেতন গ্রেড নিম্নধাপে অবনমিত করে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে অসুস্থ মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে আবারও শর্ত সাপেক্ষে ৬০ দিনের ছুটি পান তিনি। কিন্তু শর্তানুযায়ী তাঁর যোগদানের সময় চলতি বছরের ২৭ মের পর থেকে অদ্যাবধি বিদ্যালয়ে আসেননি।

একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নীনা শাহরিয়ার ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে কোনো প্রকার ছুটি ছাড়াই অনুপস্থিত আছেন। সহকর্মীদের মতে তিনি স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তবে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে একাধিকবার বাড়ির ঠিকানায় গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ইতোমধ্যে অনুপস্থিতির বিষয়ে পত্রমারফত কৈফিয়ত তলব করা হলেও জবাবও মেলেনি।

অন্যদিকে, নীনা শাহরিয়ারের বোন ভিমরুল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নীপা শাহরিয়ার গত বছরের ৯ অক্টোবর থেকে করোনাবিষয়ক চিকিৎসা ছুটি নেন। ১১ নভেম্বর আরও ছয় মাসের ছুটি বর্ধিত করেন। এরপর আর বিদ্যালয়ে আসেননি। তিনি বর্তমানে কোথায় আছেন সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে ছালমা। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম কুমার কুণ্ডু জানান, অননুমোদিত ছুটিসহ সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘনের কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযুক্ত শিক্ষকদের অনুপস্থিতির শুরু থেকেই বেতন-ভাতা স্থগিত করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া জানান, ইতোমধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিষয়ে তদন্ত করে জেলা শিক্ষা অফিসারকে পত্র দেওয়া হয়েছে। তাতে চাকরিবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।

 

সর্বশেষ খবর