জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেছেন, আগামীতে স্বচ্ছ, প্রশ্নমুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। এ জন্য নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী আরও বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি এখন জনদাবিতে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশই ইভিএমে ভোট প্রদানে অভ্যস্ত নয়, তাই আমরা ব্যালটেই ভোট চাই। সেই সঙ্গে নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জমিয়ত মহাসচিব বলেন, দেশ আজ গভীর সংকটে নিপতিত। কৃষি ও রপ্তানি খাতসহ সর্বক্ষেত্রে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত। সীমাহীন দুর্নীতি এবং হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার কারণে আজ এ রকম দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ আজ বহুমাত্রিক চাপে দিশাহারা। এক দিকে সারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে কৃষক জনতা বিপর্যস্ত। আরেকদিকে অব্যাহত লোডশেডিংয়ে জনজীবনের বেহাল দশা। অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এরই মধ্যে সরকার হুট করে জ্বালানি তেলের এক লাফে নজিরবিহীন পরিমাণ মূল্যবৃদ্ধি করে গণমানুষের দুর্ভোগ ও দুর্দশা বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, এভাবে জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। অতীত ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে জমিয়ত মহাসচিব সরকারের উদ্দেশে বলেন, জনস্বার্থে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে এবং দ্রব্যমূল্যকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সব প্রার্থীর এজেন্টদের উপস্থিতিতে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণার আইন শতভাগ কার্যকর করতে হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকতে হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়াকে নিরুৎসাহিত না করে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমা দেওয়ার আইন বাতিল করতে হবে। কেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদান এবং ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা প্রদানের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও তার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। জনমনে বিতর্ক ও প্রশ্ন সৃষ্টি হয় এমন বক্তব্য প্রদানের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ত্রুটিমুক্ত ব্যবস্থা প্রবর্তন করে প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের ভোট প্রদান প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে।