শফিকুল ইসলাম ১৫ দিন আগে একটি ব্যাংক থেকে ২০০ ডলার নিতে পেরেছেন। সেই অ্যানডোর্সমেন্টের কাগজ দিয়ে ভারতীয় ভিসা নিয়েছেন। কিন্তু এখন বুঝতে পেরেছেন তার আরও ডলারের প্রয়োজন। এখন ব্যাংকে গেলে বলা হচ্ছে, পাসপোর্টে একবার ডলার লাগানো হয়েছে। এতে নতুন করে আবার ডলার দেওয়া যাবে না। বাধ্য হয়ে তিনি মানি চেঞ্জারদের কাছে এসেছেন। কিন্তু তাদের কারও কাছেই কোনো ডলার নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স নিয়ে রাজশাহীতে চারটি প্রতিষ্ঠান ১৯৯৮ সাল থেকে মুদ্রা বিনিময় করে আসছে। প্রতিষ্ঠান চারটি হলো রিলায়েন্স মানি চেঞ্জার, মুনলাইট মানি চেঞ্জিং, হাসান মানি চেঞ্জার ও এমএস মানি চেঞ্জার। দুই মাস ধরে প্রতিষ্ঠানগুলো ডলারের সংকটে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার চারটি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোথাও ডলার কেনাবেচা দেখা যায়নি।
রিলায়েন্স মানি চেঞ্জারের ব্যবস্থাপক শামসুল হক বলেন, ডলার না পেয়ে ফিরে গেছেন পাঁচ-ছয়জন। তিনি আরও জানান, মাস দুয়েক আগে ডলারের দাম যখন ৯০-৯২ টাকা ছিল তখনো ডলারের সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু অব্যাহতভাবে দাম বাড়তে থাকায় এখন আর কেউ বিক্রি করতে আসছেন না। গত ১০ দিনের মধ্যে তিনি এক দিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ডলার কিনেছিলেন। এখন কোনো কোনো দিন একটি ডলারও কেনা হচ্ছে না। রাজশাহীর সব প্রতিষ্ঠানেরই একই অবস্থা।
মুনলাইট মানি চেঞ্জারে গিয়ে ডলার কিনতে চান আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। জানতে চান ডলারের রেট কত। মুনলাইটের কম্পিউটার অপারেটর মো. রাফি তাকে বলেন, কোনো রেট নেই। কারণ জানতে চাইলে রাফি বললেন, বিক্রি করার মতো তাদের কোনো ডলার নেই। রাফি বলেন, দেড়-দুই মাস থেকে ডলারের মূল্য বেড়েই চলছে। আরও মূল্য বৃদ্ধি হতে পারে ভেবে কেউ আর ডলার বিক্রি করতে আসছেন না। ফলে তাদের হাতে কোনো ডলার নেই।এমএস মানি চেঞ্জারের ক্যাশিয়ার রুহুল আমিন বলেন, ‘ডলারের প্রচুর চাহিদা। কিন্তু আমাদের হাতে ডলার নেই। আমার কাছে এখন ২০০ ডলারও নেই যে একজন ক্রেতাকে দেব।’ একই কথা বললেন হাসান মানি চেঞ্জারের ব্যবস্থাপক তসিকুল ইসলাম লিটন। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে বসে আছি, কেউ বেচতে আসেনি। কয়েকজন কিনতে এসে ফিরে গেছেন। আমরা বিক্রেতার আশায় বসে আছি। কিন্তু কেউ আসছেন না।’