গ্রিসে অনিয়মিতভাবে বসবাসরত ১৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি তাৎক্ষণিক বৈধ বা নিয়মিত হওয়ার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন এথেন্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ। আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি বৈধকরণ কার্যক্রম শুরু হবে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও গ্রিসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
তা বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হিসেবে গ্রিসে বসবাসরত অনিয়মিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধ করার প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়। এ লক্ষ্যে গ্রিক সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে গ্রিসে অনিয়মিতভাবে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধ করার কার্যক্রম শুরু হবে। এ জন্য গ্রিক সরকার একটি অনলাইন প্লাটফরম চালু করবে। যেখানে শুধু অনিয়মিত বসবাসরত বাংলাদেশিরা আবেদন করবেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করে তাৎক্ষণিক বৈধ হতে পারবেন এবং বৈধভাবে চাকরির সুযোগ পাবেন। অনলাইনে আবেদন সঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার পরপরই আবেদনকারীর ই-মেইলে তার অস্থায়ী রেসিডেন্স পারমিট পাঠানো হবে। বৈধ বা নিয়মিত হওয়ার প্রক্রিয়াটি সহজ ও সংক্ষিপ্ত। এতে জটিলতা না থাকায় কোনো এজেন্ট বা আইনজীবীর শরণাপন্ন হওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। প্রয়োজনে দূতাবাসের সহায়তা নেওয়া যাবে কিংবা বিশ্বস্ত আইনজীবীর সহায়তা নিয়ে আবেদন করা যাবে। রাষ্ট্রদূত বলেন, আবেদন প্রক্রিয়া তিন ধাপে সম্পন্ন হবে। নিয়মিত হতে আগ্রহী বা ইচ্ছুক প্রবাসী বাংলাদেশিরা দূতাবাসে তাদের নাম নিবন্ধন করবেন ও তাদের পাসপোর্টের একটি অনুলিপি সত্যায়িত করে নিয়ে যাবেন। দূতাবাসে নাম নিবন্ধনের সময় যেসব বিষয় থাকতে হবে সেগুলো হলো- ১. দুই বছরের বেশি মেয়াদ সম্পন্ন পাসপোর্ট ২. এ বছরের ৯ ফেব্রুয়ারির আগে গ্রিসে আগমন বা বসবাসের প্রমাণপত্র ৩. একটি ই-মেইল অ্যাড্রেস এবং ৪. আবেদনকারীর নামে নিবন্ধিত একটি মোবাইল নম্বর। যারা ইতোমধ্যে তাদের সম্ভাব্য চাকরিদাতা নিশ্চিত করতে পেরেছেন তারা শিগগির দূতাবাসে এসে নাম নিবন্ধন করে এবং তাদের পাসপোর্টটি সত্যায়িত করে নিয়ে যেতে পারেন। দূতাবাসে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রায় শতাধিক আবেদনকারীর নাম নিবন্ধিত করা হয়েছে। দূতাবাসে নাম নিবন্ধন হলেই শুধু গ্রিক সরকারের ঘোষিত অনলাইন প্লাটফরমে নিয়মিত হওয়ার জন্য মূল আবেদন করা যাবে। নিবন্ধনকারীদের নাম দূতাবাস অনলাইনে যুক্ত করার মাধ্যমে তাদের আবেদনের প্রাথমিক ধাপটি সম্পন্ন করবে। ফলে অন্য কোনো দেশের নাগরিক জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে অনলাইন প্লাটফরমের নিয়মিতকরণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে বেবুচি বা অস্থায়ী রেসিডেন্স পারমিট সংগ্রহ করতে পারবে না। সংশ্লিষ্ট গ্রিক কর্তৃপক্ষ আবেদনটি যাচাই-বাছাই করে গ্রহণের পর পাঁচ বছরের রেসিডেন্ট কার্ড প্রদান করবে। প্রতি পাঁচ বছর পর এটি নবায়ন করা যাবে। রাষ্ট্রদূত বলেন, নিয়মিতকরণের প্রক্রিয়া অচিরেই লিখিতভাবে বা রুলস আকারে গেজেটে প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া গ্রিক সরকার ও দূতাবাস একটি ফ্লোচার্টের মাধ্যমে ধাপে ধাপে পুরো প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। আশা করা যাচ্ছে সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখের আগেই গ্রিসের মন্ত্রিসভায় পাস হওয়ার পর তা প্রকাশিত হবে। গ্রিসের মন্ত্রিপরিষদে পাস হওয়ার পর গেজেট আকারে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।