শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বড় অন্তরায় ক্যাম্পে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী

মোহাম্মাদ আলী শিকদার

বড় অন্তরায় ক্যাম্পে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মাদ আলী শিকদার বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত যেতেই হবে। বাংলাদেশ কখনই এদের ভার চিরদিনের জন্য বহন করবে না। এদের ফেরত দেওয়ার জন্য অবশ্যই জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। এটা শুধু মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়ভাবে করলে হবে না, চীনসহ আসিয়ানভুক্ত দেশের সরকারগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে সমাধান বের করতে হবে। এ ছাড়া আর দ্বিতীয় কোনো সমাধান নেই। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। মোহাম্মাদ আলী শিকদার বলেন, বাংলাদেশের হয়ে যাঁরা আন্তর্জাতিকভাবে দেনদরবার করেন তাঁদের মিয়ানমারের অভ্যন্তরের সামরিক পরিস্থিতি বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। মিয়ানমারের ভিতরে ফেব্রুয়ারিতে সামরিক সরকার আসার পর সমান্তরালভাবে যে প্রবাসী সরকার গঠিত হয়েছে সেই সরকারকে পশ্চিমা বিশেষ কিছু দেশ সমর্থন দিচ্ছে। আবার সীমান্তের আশপাশে কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিশেষত আরাকান আর্মির তৎপরতার কথা শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কিছু মানুষকে কখনো কখনো বলতে শোনা যায় মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করে কিছু হবে না, এর পরিবর্তে এই প্রবাসী সরকার ও গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার। এটা করা হলে তা হবে বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী। তখন রোহিঙ্গা সংকটের আর কোনো দিনই সমাধান হবে না। এই নিরাপত্তা বিশ্লেষকের মতে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের সবচেয়ে বড় অন্তরায় বাংলাদেশের ক্যাম্পগুলোর ভিতরে থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। গত পাঁচ বছরে ১২৩ জনকে হত্যা করেছে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এর সঙ্গে রোহিঙ্গা নেতা মুহিব্বুল্লাহকে হত্যার জন্য দায়ী করা হয় মিয়ানমার সরকারের সবচেয়ে ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসাকে। এরা সরাসরি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিপক্ষে। এখন আরসা যদি আমাদের ভিতরে আনাগোনা করে এবং তাদের যদি গ্রেফতার করা সম্ভব না হয়, তাহলে একেই বড় অজুহাত হিসেবে দেখবে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। দুই বছর আগে যখন প্রত্যাবাসনের একটি বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল তখন এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রত্যাবাসন-ইচ্ছুকদের হুমকি দেওয়ার খবরও আসে। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিষয়ে আমাদের জিরো টলারেন্স দেখানো প্রয়োজন। তা হলেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথ সুগম হবে। তবে কবে হবে তা বলা কঠিন। কারণ মিয়ানমার সরকারের এ বিষয়ে অনাগ্রহ তো আছেই। তাদের কিছু অজুহাতও আছে। তাই তাদের অজুহাতের রাস্তা বন্ধ করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আর সুবিধাভোগীরা কিন্তু ইতোমধ্যে নানা ধরনের অবৈধ বাণিজ্যের মাধ্যমে টাকার পাহাড় গঠে তুলেছে। দেশে ও দেশের বাইরে তারা অর্থবিত্ত জমিয়ে ফেলেছে। তাই তারা কোনোভাবেই তাদের এ অবৈধ সাম্রাজ্য ধ্বংস করতে চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক। আমাদের এটা ভেঙে দিতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর