ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাস। যিনি বাইসাইকেল দিয়ে কয়েকবার বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন। ১৮৯৪ সালের ১৩ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বানিয়াচং গ্রামের বিদ্যাভূষণপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম বিরজানাথ বিশ্বাস ও মাতার নাম গুণময়ী দেবী। রামনাথ বানিয়াচংয়ের হরিশ্চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। এর পর থেকেই সাইকেল নিয়ে তিনি পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনবার। সেসব অভিজ্ঞতা থেকে বাংলা ভাষায় লিখেছেন ৪০টি ভ্রমণবিষয়ক বই। ১৯৫৫ সালের ১ নভেম্বর কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বিশ্বজয়ী রামনাথ বিশ্বাস। রামনাথ বিশ্বাস জীবনের শেষ সময়টুকু কলকাতায় কাটালেও বানিয়াচং গ্রামের বিদ্যাভূষণপাড়ায় ছিল তার বসতভিটা। ৪ একর ৪৮ শতাংশের বাড়িতে বসতঘরের পাশাপাশি ছিল দৃষ্টিনন্দন মন্দির ও কয়েকটি পুকুর। রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের দাবি এবং তার ভ্রমণ-ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে, হাজারো সাইক্লিস্টের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ট্রাভেল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন। আজ তারা হবিগঞ্জ শহরের টাউন হল থেকে সাইকেল চালিয়ে বানিয়াচংয়ের বিদ্যাভূষণ পাড়ায় রামনাথের বাড়ি পর্যন্ত যাবেন। বিকালে হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন নেতারা। ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কথাসাহিত্যিক রুমা মোদক বলেন, রামনাথ আমাদের হবিগঞ্জের গৌরব। তিনি বাইসাইকেল দিয়ে বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন কয়েকবার। তার বাড়িটি এভাবে বেদখল হয়ে থাকতে পারে না। তিনি বলেন, আমরা চাই রামনাথের বাড়িটি দখলমুক্ত করে সেখানে একটি বিশেষায়িত পাঠাগার ও সাইকেল মিউজিয়াম গড়ে তোলা হোক। বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ জানান, বাড়িটির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। আবদুল ওয়াহেদ (অভিযুক্ত) অবৈধভাবে বসবাস করলে তাকে দ্রুত উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হবে। এদিকে, দখলের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন একাধিক সাংবাদিক। ৬ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জের স্থানীয় চার সাংবাদিক ওই বাড়িতে গিয়ে হামলার শিকার হন। এর চার দিন পর ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার এক সাংবাদিক ওই বাড়িতে গিয়ে হামলার শিকার হন। এ সময় স্থানীয় আরও তিন সাংবাদিককেও মারপিট করা হয়। এ ঘটনায় বানিয়াচং থানায় মামলা করা হয়।