কথায় আছে, ‘রাখে আল্লাহ মারে কে।’ এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায়। প্রায় ২৫ ফুট গভীর কূপের ভিতর মাটি চাপায় আটকা পড়ে আবুল হাসান (৩০) নামে এক শ্রমিককে দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা চেষ্টার পরে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে আবুল হাসানসহ চার শ্রমিক পৌর শহরের বালুয়াভাটা গ্রামে বাবলু দাশের বাড়িতে টয়লেটের কূপ খনন করতে যান। তারা ২৫-৩০ ফুট একটি কূপ খনন করে রিং বসাচ্ছিলেন। বেলা ২টার দিকে পাশেই আরেকটি কূপ খনন করে তিনটি রিং বসানোর সময় মাটি ধসে পড়ে। এতে ২৫-২৬ ফুট গভীর কূপের ভিতর আবুল হাসানের গলা পর্যন্ত মাটি-বালু চাপা পড়ে। বাড়ির মালিক ও তিন শ্রমিক তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। চার ঘণ্টা চেষ্টায় ব্যর্থ হলে তারা সন্ধ্যা ৬টার দিকে বদরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের খবর দেন। ততক্ষণে আবুল হাসানের মাথা পর্যন্ত মাটি চাপা পড়ে। রাত ৮টা পর্যন্ত বদরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হলে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে আসে বাদশা মাসউদ আলমের নেতৃত্বে রংপুর ফায়ার সার্ভিসের একদল কর্মী। রাত ১০টার দিকে উদ্ধার কাজে যোগ হন রংপুর বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জসীম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল কর্মী। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে রাত ১২টায় ৫৬ মিনিটে জীবিত উদ্ধার হন আবুল হাসান। তাকে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভর্তি করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, থানার পুলিশসহ স্থানীয় জনগণ। বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জসীম উদ্দিন বলেন, আবুল হাসান ২৫ ফুট গভীরে এমনভাবে মাটি-বালু চাপায় ছিলেন, তাকে জীবিত উদ্ধার করা খুবই কঠিন ছিল। কারণ কূপের ভিতর দাঁড়ানোর মতো জায়গা ছিল না। অনেকটাই ঝুঁকি নিয়ে আস্তে আস্তে করে চাপা পড়া মাটি-বালু সরিয়ে সবার সহযোগিতায় রাত ১টার দিকে তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) শাকির মুবাশি^র বলেন, আবুল হাসানের ইসিজি রিপোর্ট ভালো। তবে তার দুই পায়ে রক্ত চলাচল বন্ধ ছিল। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।