বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

চাঁদনী চকে স্বর্ণের দোকানে চুরি উদ্ধার হয়নি স্বর্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর চাঁদনী চক মার্কেটের সততা জুয়েলার্স থেকে চুরি হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। যদিও এ ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) রমনা বিভাগ। এদের মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একজন আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চাঁদনী চক মার্কেটের ৩ নম্বর বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় ৬৪ নম্বর সততা জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটে। চোর চক্র ওই দোকান থেকে ১০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা মূল্যের সাড়ে ১৩ ভরি স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে গেছে বলে জানান সততা জুয়েলার্সের কর্ণধার স্বপন চৌধুরী। তিনি বলেন, ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা থেকে ২১ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যে দোকানে চুরি হয়। যেমন তালা তেমনই ছিল। নকল চাবি দিয়ে দোকান খোলা হয়েছে। ঘটনাটি বাংলাদেশ  জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) ও চাঁদনী চক বিজনেস ফোরামকে জানানো হয়। পাশাপাশি এ ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর নিউমার্কেট থানায় মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় একটি সোনার দোকানের কর্মচারী ফরহাদ হোসেন ওরফে চুগিকে প্রধান আসামি করা হয়। এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ফরহাদ এবং তার দুই সহযোগী সততা জুয়েলার্সে নকল চাবি দিয়ে প্রবেশ করে। তারা দুটি চেইন, চার জোড়া কানের দুল ও এক জোড়া ঝুমকা চুরি করে নিয়ে যায়। যা চাঁদনী চক মার্কেটে রক্ষিত সিসিটিভির ফুটেজে ধরা পড়ে। দুই বারে মোট ২০ ভরি স্বর্ণ চুরি করেছে চক্রটি। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১৬ লাখ টাকা। চুরির ঘটনায় স্বর্ণের তিনটি আংটি ও এক জোড়া বালি (১ ভরি ৬ আনা) উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে ডিবি। আমরা এ পর্যন্ত দোকান থেকে চুরি যাওয়া কোনো স্বর্ণ হাতে পাইনি। মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চক্রের হোতা ফরহাদ প্রায় দুই বছর ধরে ভুক্তভোগী স্বপনের দোকানের পাশের দোকানে কর্মচারী ছিলেন। অতিরিক্ত কাজ হিসেবে স্বপনের দোকানের সাটার খোলা এবং বন্ধ করার কাজ করতেন। ফরহাদ কৌশলে তার দোকানের চাবির নকল তৈরি করে ফেলেন। কাজে ফাঁকি দেওয়ার জন্য ৫ সেপ্টেম্বর তার মালিক সঞ্জয় পাল তাকে চাকরিচ্যুত করেন। এরপর তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে নকল চাবি দিয়ে স্বপনের দোকানে চুরির পরিকল্পনা করেন। চুরির পর আংশিক স্বর্ণ বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করেন। সেই টাকা দিয়ে নিউমার্কেটে তারা ৬ বন্ধু নতুন জামা-কাপড় কেনেন এবং কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ভ্রমণে যান। টাকা শেষ হলে পুনরায় ঢাকায় এসে স্বর্ণ বিক্রি করতে গেলে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ডিবির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মোহাম্মদ ফজলে এলাহী জানান, সততা জুয়েলার্সে চুরির ঘটনায় ১২ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল হোতা মো. ফরহাদ হোসেন ওরফে চুগি, মারুফ ও মোহাম্মদ সাকিব আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চুরির ঘটনায় জড়িত এই তিনজন ছাড়াও ফরহাদের অন্য তিন বন্ধু হচ্ছেন জাহিদ, আরিফ ও আবদুল্লাহ স্বপন। এ ছাড়া চুরির ঘটনায় জড়িত অন্য পাঁচজন হলেন স্বর্ণের ক্রেতা। তারা হলেন- মোহাম্মদ ওবায়েদ, মোহাম্মদ তারা মিয়া, ফজলু মাতাব্বর, মোহাম্মদ শুকুর ও তপন রায়। এদের বাইরে আদালতে দেওয়া ফরহাদের জবানবন্দিতে স্বর্ণ কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত পলাশের সম্পৃক্ততা উঠে আসে। ইতোমধ্যে পলাশ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। আমরা এ পর্যন্ত ১ ভরি ৬ আনা স্বর্ণ উদ্ধার করেছি। বাকি স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর