বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

এবার ১১ মাসের শিশুকে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইল এলাকায় ১১ মাসের সন্তানকে জিম্মি করে এক গৃহবধূকে তিন ঘণ্টা আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী। পরে ওই দিন রাতে এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ বন্দরে গার্মেন্টকর্মী প্রেমিকাকে পার্কে ডেকে নিয়ে প্রেমিকসহ আটজন মিলে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই শিশুসন্তানকে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটল। গতকাল গ্রেফতার আসামিদের আদালতে প্রেরণ করলে তারা দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।

২৩ অক্টোবর দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন বাবুরাইল বৌবাজার নয়াপাড়া এলাকার মজিবর রহমানের বাড়ির সেলিনা নামের এক নারীর ফ্ল্যাটে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই গৃহবধূ। মামলার আসামিরা হলেন- বন্দর থানার আমিন দ্বিতীয় গলি এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সোহেল রানা (৩৪), বৌবাজার নয়াপাড়া এলাকার মৃত কবির হোসেনের মেয়ে সেলিনা (৩৫), সিরাজুল হকের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৫৫), মেহেদী (৩০) ও সৌরভ (৩০)। এদের মধ্যে সোহেল রানা, সেলিনা ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা জানান, ২৩ অক্টোবর ভুক্তভোগী নারীকে টাকা ধার দেওয়ার কথা বলে কৌশলে সেলিনার ভাড়া বাসায় নিয়ে যান সোহেল রানা। তার সহযোগিতায় চারজন মিলে ওই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। এ সময় গৃহবধূর ১১ মাসের সন্তানকে জিম্মি করেন ধর্ষকরা। ২৫ অক্টোবর ওই নারীর স্বামী থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি সোহেল রানাসহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী দুই সন্তানের জননী। তার সঙ্গে প্রধান আসামি সোহেল রানার পরিচয় ছিল। ২৩ অক্টোবর ওই নারী সোহেল রানার কাছে ১ হাজার টাকা ধার চান। সোহেল টাকা নিতে ওই নারীকে শহরের ডিআইটি মোড় এলাকায় আসতে বলেন। ওই নারী ১১ মাসের সন্তানকে নিয়ে ডিআইটি মোড় এলাকায় আসার পর সোহেল তাকে বলেন, তার সঙ্গে টাকা নেই, টাকা নেওয়ার জন্য বাসায় যেতে হবে। পরে বেলা ১২টার দিকে সোহেল ওই নারীকে নিয়ে শহরের বাবুরাইল বৌবাজার নয়াপাড়া এলাকার মজিবর রহমানের বাড়ির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। ওই ফ্ল্যাটে আসামি সেলিনার বাসা। এ সময় সেলিনা ওই নারীর ১১ মাসের সন্তানকে জোর করে কেড়ে নেন এবং প্রধান আসামি সোহেল ওই নারীকে সেখানে ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগী নারীর বরাত দিয়ে এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামি সেলিনা অন্য আসামি মোহাম্মদ আলী, মেহেদী ও সৌরভকে ফোন করে তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। পরে তারা সেলিনার সহায়তায় ওই নারীকে পালাক্রমে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ ও নির্যাতন করেন। বেলা ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা ওই নারীকে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মুক্তি দেন আসামিরা।

সর্বশেষ খবর