১৩ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে ২০২৩ সালের ৫৫তম ইজতেমার প্রথম পর্ব। এরপর ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটবে। এরপর চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। পরে ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে।
রাজধানীর সন্নিকটে টঙ্গী কহরদরিয়াখ্যাত তুরাগ নদের তীরে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন মুসল্লিরা। রাজধানী ও নিকটস্থ বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিরা প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর ছুটতে শুরু করেন টঙ্গী ইজতেমা ময়দান অভিমুখে। মসজিদ ও মাদরাসার ছাত্র ছোট-বড় সবাই স্বেচ্ছায় কাজ করছেন ময়দানে। আল্লাহকে রাজি-খুশি ও দ্বীনের মেহনত হিসেবে স্বেচ্ছায় শ্রম দিচ্ছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা জানান, তুরাগ নদের তীরবর্তী ১৬০ একর জমি বিস্তৃত ইজতেমা ময়দান প্রস্তুত করতে শত শত মুসল্লিরা ময়দানে এসে কেউ মাটি কাটা, কেউ খুঁটি গাঁথা, কেউবা চটের সামিয়ানা তৈরি, আবার অনেকে ময়দান পরিষ্কারসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। সূত্র মতে, প্রথম পর্বে যোবায়ের অনুসারী এবং দ্বিতীয় পর্বে সাদ গ্রুপের মুসল্লিরা অংশ নেবেন। ঢাকার শনির আখড়া দাওয়াতুল কুরআন ওয়াসসুন্নাহ মাদরাসার ছাত্র ইয়াছিন, শাহাদাত, নাহিদ হাসন বলেন, তারা ফজর নামাজ শেষে মাদরাসার ছাত্র ও মসজিদের প্রায় ৭০ জন মুসল্লি বাসযোগে চলে এসেছেন ইজতেমা ময়দানে। এরপর সবাই মাটি কাটা, বাশের খুঁটি গাঁথাসহ বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। তারা বলেন, এখানে স্বেচ্ছায় কাজ করার উদ্দেশ্য হলো দ্বীনের মেহনত ও আল্লাহকে রাজি-খুশি করা। একই সুরে কথা বললেন ঢাকা মিরপুর ১০ নম্বর এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার ছাত্র হাফিজুল ইসলাম। টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. শাহআলম বলেন, ইজতেমা উপলক্ষে ময়দান ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এ বিষয়ে ময়দানের আয়োজক কমিটির এক মুরব্বি ডা. কাজী সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আলমি সূরার বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার খবর দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বিদেশি মুসল্লিরা ফোন করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। ইজতেমা ফের চালু হওয়ায় মুসল্লিরা অনেক খুশি। এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটির মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে আগের মতো এবারও মুসল্লিদের সেবায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ব্যাপক সেবামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং বহির্বিশ্ব থেকে আগত মুসল্লিদের সেবায় আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে। উল্লেখ্য, গত ২০১৯ সালের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘ তিন বছর ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি। দীর্ঘ তিন বছর বন্ধ থাকার পর ২০২৩ সালে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফের চালু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার কার্যক্রম।