শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রজাপতি পাখনা মেলল জাবিতে

শরিফুল ইসলাম সীমান্ত, জাবি

প্রজাপতি পাখনা মেলল জাবিতে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকালের দিনটি ছিল রংবেরঙের প্রজাপতির পাখনা মেলা দিন। জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে দিনব্যাপী ১২তম বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রজাপতির এই মেলা। ‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ স্লোগানকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ব্যতিক্রমী প্রজাপতি মেলা। প্রাণ, প্রকৃতি এবং পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধিই এই মেলার মূল লক্ষ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রজাপতি মেলার আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই এগিয়ে যাওয়া মানে শুধুই অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়। প্রাণ, প্রকৃতি এবং পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই প্রজাপতির মতো অন্যান্য ছোট পতঙ্গ যারা পরাগায়নের মাধ্যমে বনাঞ্চল রক্ষা করে- তাদের রক্ষায় আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সারা দেশে যত প্রজাতির প্রজাপতি পাওয়া যায় তার এক চতুর্থাংশ পাওয়া যেত জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাসে। সেই পরিমাণটা এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগে এখানে ১২০ প্রজাতির প্রজাপতি পাওয়া গেলেও বর্তমানে এই সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ৫২ তে। আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ যে দিন দিন বিপন্ন হয়ে উঠছে- এটি তারই উদাহরণ। দিনব্যাপী এই মেলার মূল আকর্ষণ ছিল শিশু

কিশোরের দল। তাদের সরব উপস্থিতিতে মেলায় ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রজাপতির রঙিন ডানায় ভেসে এক দিনের জন্য ওরাও হয়ে উঠেছিল প্রজাপতির মতোই চঞ্চল। মেলার নানাবিধ কার্যক্রমের মধ্যে ছিল শিশু কিশোরদের ছবি আঁকা ও কুইজ প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি ওড়ানো, প্রজাপতিবিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, বারোয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বর্ণাঢ্য র‌্যালি ইত্যাদি। প্রজাপতি সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য ‘বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ প্রদান করা হয় ‘তরুণপল্লব’ নামক একটি সংগঠনকে।

এ ছাড়া ‘বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুজিয়াস্ট ২০২২’ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দীপ্ত বিশ্বাস। প্রধান অতিথি হিসেবে বেলা ১১টায় মেলার উদ্বোধন করেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মনজুরুল হক। পরিবেশ রক্ষায় ব্যতিক্রমী এই আয়োজন দেশব্যাপী গণসচেতনতা বৃদ্ধি করবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘প্রজাপতি ভালোবাসার প্রতীক। সৌন্দর্যের প্রতীক। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রজাপতির সংখ্যা বিশেষ মানদন্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রজাপতির নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করতে পারলে আমরাও প্রকৃতির হাতে নিরাপদ থাকব।

সর্বশেষ খবর