শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে চাই : প্রধানমন্ত্রী

পাঁচ নারী পেলেন বেগম রোকেয়া পদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে চাই : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে চাই। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমরা ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি। যাকে ভিত্তি করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারে। গতকাল সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বেগম রোকেয়া দিবস ও বেগম রোকেয়া পদক প্রদান অনুষ্ঠান ২০২২’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদান রাখায় এ বছর বেগম রোকেয়া পদক দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রামের প্রফেসর কামরুন নাহার বেগমকে (অ্যাডভোকেট)। নারীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখায় বেগম রোকেয়া পদক বিজয়ী হয়েছেন সাতক্ষীরার ফরিদা ইয়াসমিন (জন্মস্থান খুলনা)।

নড়াইলের ড. আফরোজা পারভীন সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন। পল্লী উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন ঝিনাইদহের নাছিমা বেগম। নারী শিক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন ফরিদপুরের রহিমা খাতুন।

পদকপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম স্বর্ণপদক, পদকের রেপ্লিকা, ৪ লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা। বক্তব্য দেন সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার কম্পিউটার প্রযুক্তি শিক্ষা একেবারে জেলা ও উপজেলা ভিত্তিক করে দিয়েছে। গ্রামে গ্রামে সুবিধার জন্য ‘তথ্য আপা’ সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন প্রায় পূরণ করা হয়েছে। সংসদে স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা এবং সংসদ উপনেতা- এ চারজনই মহিলা ছিলাম। দুর্ভাগ্যের বিষয়, আপনারা জানেন, আমাদের সংসদ উপনেতা বেগম সাজেদা চৌধুরী কিছুদিন আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে এ শূন্যস্থান পূরণ আমরা একজন নারীকে দিয়েই করব।

নারীদের ফ্রিল্যান্সিংয়ে উৎসাহিত করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার সারা দেশে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছে, ফ্রিল্যান্সারদের স্বীকৃতি দিয়েছে, লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, যেখানে উদ্যোক্তা একজন নারী ও একজন পুরুষ। সেখানে সব থেকে বেশি লাভবান হচ্ছে দেশের নারীসমাজ। এর মাধ্যমে স্বল্পশিক্ষিত একজন নারীও ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। তিনি বলেন, কাজেই সারা দিন ফেসবুক আর এসব না দেখে তারা যদি এই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাটা নেয়, ফ্রিল্যান্সিংটা করে তাহলে কিন্তু সেখানে বসে সে কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারে। একটি প্রত্যন্ত ইউনিয়নে বসে কিছু শিক্ষা নিয়ে সে দেশে-বিদেশে অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছে। যেটা অনেক ছেলেমেয়ে করে যাচ্ছে।

 

বেগম রোকেয়ার অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমাদের নারীদের শিক্ষা, নারীদের জাগরণ, নারীদের যতটুকু অর্জন, এর পেছনে বেগম রোকেয়ার অবদান রয়েছে। ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়ার জন্মদিন। তিনি যদি সেই অচলায়তন ভেঙে নিজে শিক্ষা নিয়ে মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা না করতেন তাহলে আমরা আজকে যে যেখানে আছি, কেউ থাকতে পারতাম না।

তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন ছিল মেয়েরা জজ-ম্যাজিস্ট্রেট হবে। নারীরা সব দায়িত্ব নেবে। তিনি যে আকাক্সক্ষা করে গেছেন, আমরা কিন্তু ধীরে ধীরে সেটা অর্জনের পথে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশাসনে একটি ব্যবস্থা আছে, রাষ্ট্রপতির কোটায় ১০ শতাংশ অফিসার নিয়োগ দেওয়া যায়। আমি সেই কোটা ধরে প্রথম মেয়ে নিয়োগ দিলাম। আমার অফিসে সচিব হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রথম নিয়োগ দিলাম। এভাবে দরজা খুলে দিয়েছি। প্রথম এসপি যখন করতে গেছি, প্রচ  বাধা। মেয়েরা এসপি হবে! আমি বলেছি, হ্যাঁ, মেয়েরাই এসপি হবে।

তৃতীয় লিঙ্গ প্রসঙ্গে বলেন, এরা তো কোনো অপরাধ করেনি। এরা তো বাবা-মায়েরই সন্তান। বাবা-মাকে ফেলে দিয়ে তাদের রাস্তায় চলে যেতে হবে কেন? তাদের জীবন-জীবিকার কোনো কিছু থাকবে না, এটা তো হতে পারে না।

সর্বশেষ খবর