হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) প্রেসিডেন্ট ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেছেন, আত্মীয়-স্বজনের জানাজা পড়তে যখন কেউ যায়, তখন সে পালানোর জন্য যায় না। তবে আসামি বড় সন্ত্রাসী হলে, তাকে নিয়ে অনেক ঝুঁকি থাকলে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখতে পারে। এ ব্যাপারে হাই কোর্টের নির্দেশনাও আছে। কিন্তু এখানকার আসামি তেমন না। আমার মনে হয় না তাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখা সঠিক হয়েছে। এ ধরনের আচরণ বন্ধ করা উচিত, যাতে মানুষের মধ্যে পুলিশের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন না ওঠে।
তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জানাজায় অনেক লোক ছিল। তার পরও পুলিশ যদি পালানোর মতো আশঙ্কা করে, সেই অনুযায়ী নিরাপত্তা রাখবে। কিন্তু মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখা মানবাধিকার লঙ্ঘন। এ ধরনের আচরণ নতুন নয়, প্রায়ই ঘটছে। এর পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অজ্ঞতার বিষয় জড়িত আছে বলে মনে হয়। মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখায় ‘জেল কোডের ব্যত্যয় হয়নি’ বলে কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, একটি আইনের সঙ্গে আরেকটি আইন মিলিয়ে পড়তে হবে। একটা লাইন পড়ে যদি কেউ বলে আইনের ব্যত্যয় হয়নি, সেটা মনে হয় ঠিক না। জেল কোডের বিধান অনুযায়ী সেই ধরনের আসামিকে- যারা মারাত্মক সন্ত্রাসী, দুর্ধর্ষ এবং পালিয়ে যেতে পারে আশঙ্কা আছে, তাকে ডান্ডাবেড়ি পরাতে হবে। সেই চিন্তাটা অন্য আসামির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলে আইনের ব্যত্যয় তো হবেই। সব আসামির চরিত্র তো এক না। এখানে যে আসামিকে মায়ের জানাজায় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখা হয়েছে, তিনি তো রাজনৈতিক লোক। কোনো দলের রাজনীতি যারা করেন, তারা তো এভাবে পালাবেন না। তিনি জানেন তাকে আইনগত প্রক্রিয়ায় জেল থেকে বেরিয়ে আবার রাজনীতি করতে হবে। সেক্ষেত্রে জেল কোডের ব্যত্যয় হয়নি বলে যিনি মন্তব্য করেছেন, তার বোঝার দুর্বলতা থাকতে পারে। সমস্ত আইন, সংবিধান, মানবাধিকার, জেল কোড সবকিছু মিলিয়ে পড়লে বুঝতে পারবেন কোন আসামির সঙ্গে কেমন আচরণ করা দরকার।