বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

মোবাইলে চলে অবৈধ হাজারো মানি এক্সচেঞ্জ : সিআইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোবাইলে চলে অবৈধ হাজারো মানি এক্সচেঞ্জ : সিআইডি

দেশে বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৩৫টি। তবে অবৈধ এ প্রতিষ্ঠান হাজারেরও বেশি। এরা ফোনের মাধ্যমে ঘুরে ঘুরে বেচাকেনা করে দেশি-বিদেশি মুদ্রা। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর পাঁচটি স্থানে তিনটি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ ও দুটি ভ্রাম্যমাণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ তিনটি হলো- রাজধানীর গুলশানের জেএমসিএইচ প্রাইভেট লিমিটেড, মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারের আলম আ্যন্ড ব্রাদার্স এবং উত্তরার আশকোনা মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের তৈমুর মানি এক্সচেঞ্জ। বাকি দুটি ভ্রাম্যমাণ প্রতিষ্ঠান। এ সময় পাঁচ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- আবু তালহা ওরফে তাহারত ইসলাম তোহা (৩২), আছাদুল শেখ (৩২), হাছান মোল্যা (১৯), আবদুল কুদ্দুস (২৪), হাসনাত এ চৌধুরী (৪৬), শামসুল হুদা চৌধুরী ওরফে রিপন (৪০), সুমন মিয়া (৩০), তপন কুমার দাস (৪৫), আবদুল কুদ্দুস (৩২), কামরুজ্জামান রাসেল (৩৭), মনিরুজ্জামান (৪০), নেওয়াজ বিশ্বাস, আবুল হাসনাত (৪০) ও শাহজাহান সরকার (৪৫)।

গতকাল বেলা ১২টায় রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া। সিআইডি   বলছে, প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা অপ্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় পরিচালিত অবৈধভাবে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের নেপথ্যে যারাই থাক তাদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ টিমের তথ্য ও সহযোগিতায় রাজধানীর গুলশান-১, মোহাম্মদপুর রিংরোড, উত্তরার আশকোনা, এবি মার্কেট, চায়না মার্কেটে পাঁচজন বিশেষ পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ পাঁচ প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকায় অবৈধ। অভিযানে ১ কোটি ১১ লাখ ১৯ হাজার ৮২৬ টাকা সমমূল্যের ১৯টি দেশের বৈদেশিক মুদ্রাসহ সর্বমোট ১ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৬ টাকা জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন যে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দিনে ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় করত। তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হবে। সারা দেশে ১ হাজারের বেশি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অল্প সময়ে অল্প পুঁজিতে বেশি আয়ের আশায় অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জগুলো গড়ে উঠছে। প্রবাসীরা বাসায় বসেই দেশে টাকা পাঠায়। এ ক্ষেত্রে সময় বাঁচে ও কোনো হ্যারাসমেন্ট বা বাড়তি কোনো ভাড়া লাগে না। দেশের মানুষ ঘরে বসে টাকা পেয়ে যায়। তবে এটা অবৈধ। আমাদের দেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। আমাদের দেশের স্বার্থে কষ্ট করতে হবে। সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, যখন কোনো কাজে-চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন তার আগে কিছু প্রসিডিউর রয়েছে। ভিসা পাওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের যে কোনো ব্যাংকে পাসপোর্ট দেখালে বিদেশি মুদ্রা পাবেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তা দিতে বাধ্য। তাহলে কেন তারা অবৈধভাবে ১০০ টাকার ডলার ১১৫ বা ১২০ টাকায় কিনবেন! এটা অন্যায় ও অবৈধ। আমরা এই অবৈধ কাজকে উৎসাহ দিতে পারি না। লাগবেই যখন তখন বৈধভাবে নেব, ব্যাংক কিংবা বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান থেকে নেব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর