শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চাঁদা দাবির পর কাউন্টারে তালা, ৫০ বাস বন্ধ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরে চাঁদা দাবির পর কাউন্টারে তালা ও দুই শ্রমিককে মারধরের জেরে যমুনা হাই ডিলাক্স পরিবহনের ৫০টি বাস মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। গতকালও কোনো বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি।

জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও তার ভাই আওয়ামী লীগ নেতা রাকিব পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন যমুনা হাই ডিলাক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিলন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব পাটোয়ারী। 

জানা যায়, চাঁদা দাবির বিষয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি সাইফুল ইসলাম ও তার ভাই রাকিব পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় অভিযোগ দেন আবুল কাশেম মিলন। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, চাঁদার জন্য গত বছরের ৬ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের বাস টার্মিনালে যমুনা হাই ডিলাক্স পরিবহনের কাউন্টারে তালা দেন সাইফুল ইসলাম ও তার ভাই রাকিব পাটোয়ারী। পরে একই দাবিতে ৪ ফেব্রুয়ারি জেলার চন্দ্রগঞ্জ এলাকায় দুজন শ্রমিককে মারধর করা হয়। এ ছাড়া ছিনিয়ে নেওয়া হয় যমুনা পরিবহনের টিকিট। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষের একাংশ। এদিকে একই ব্যানারে বাসের মালিকানা দাবি করে বাবুল পাটোয়ারীসহ মালিকপক্ষের কয়েকজন চাঁদাবাজি বন্ধের আরেকটি অভিযোগ পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ নিয়ে দুইপক্ষ লক্ষ্মীপুর শহরে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করতে দেখা গেছে। যমুনা হাই ডিলাক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রকি মাসে ২ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন। তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করার পর থেকে ৪ মাস ধরে কাউন্টারে তালা লাগিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রী সেবা দেওয়া হতো। এখন গাড়ির চালক ও হেলপারকে মারধরে তারা গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে তারা গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখবেন বলে জানান। ফেনী থেকে শুরু করে পুলিশ সার্জেন্ট, টিআইসহ বিভিন্ন দফতর ম্যানেজ করতে তারা প্রতিদিন প্রতিটি গাড়ি থেকে ৬০০ টাকা করে নেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রকি বলেন, যমুনা হাই ডিলাক্স পরিবহনে তার পরিবারের তিনটি বাস চলাচল করে। আবুল কাশেম প্রতিটি বাস থেকে প্রতিদিন ৬০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। এই টাকা না নেওয়ার জন্য তিনি প্রতিবাদ করছেন।

এদিকে সুমুন বাহারসহ কয়েকজন বাস শ্রমিক জানান, গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন চালক ও হেলপারদের পরিবার। অনেকে জীবনের নিরাপত্তা দাবি করেন। 

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, মালিকপক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে কাউন্টারে তালা ও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে শুনেছি। বিষয়টি ফেনী থেকে পরিচালনা করা হয়। লক্ষ্মীপুর অংশে কোনো কিছু থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যমুনার ব্যানারে যেসব গাড়ি রাস্তায় চলে এর বেশির ভাগের রুট পারমিট নেই বলে একটি সূত্র জানায়। এ ছাড়া এসব গাড়ি ফেনী থেকে শুরু করে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত পুলিশের টিআই, সার্জেন্টসহ বিভিন্ন পর্যায় ম্যানেজ করে চলছে বলে জানান যমুনা হাই ডিলাক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর