শিরোনাম
সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

চালকের চেয়ে অপরিকল্পিত এক্সপ্রেসওয়ে দায়ী বেশি

বুয়েটের প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাদারীপুরের শিবচরে এক্সপ্রেসওয়েতে গত ১৯ মার্চ ইমাদ পরিবহনের একটি বাস রাস্তা থেকে ছিটকে কালভার্টের দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে গেলে ১৯ জন নিহত হয়। ওই দুর্ঘটনায় অতিরিক্ত প্রাণহানির পেছনে চালকের অসাবধানতার চেয়ে অপরিকল্পিত এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকে দায়ী করা হয়েছে বুয়েটের গবেষণা প্রতিবেদনে। গতকাল বুয়েট কাউন্সিল ভবনে বুয়েট অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) গবেষণা প্রতিবেদন টিমের প্রধান গবেষক ড. শামসুল হক বলেন, টানা গার্ড রেইল না থাকায় দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেশি হয়েছে। অবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন করতে হবে। ডব্লিউবিম থাকলে গাড়ি নিচে পড়ত না, ফলে প্রাণহানি কম হতো। গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০১৭ সালে আমদানিকৃত অশোক লেল্যান্ডের গাড়িটির ২০১৮ সালে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলেও ২০২২-এর শেষ দিকে রুট পারমিট ও রেজিস্ট্রেশন স্থগিত ছিল। তবে বাসের অভ্যন্তরীণ এবং বহির্ভাগ ভালো এবং ট্র্যাকিং ডিভাইস ছিল। তবে গাড়িটি নতুন হলেও টায়ার মানসম্মত নয়, সামনের বাম পাশের টায়ারটি ফাটা ছিল। যাত্রীর আসন সংখ্যায় ৪০ জনের অনুমোদন থাকলেও অতিরিক্ত ৩ সিট রাখার জন্য পরিবর্তন করা হয়। আর চালক মধ্যম শ্রেণির লাইসেন্স নিয়ে ড্রাইভিং করছিলেন। তবে ভারী যানবাহনের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন ছিল। প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, গাড়ির অতিরিক্ত গতি, চালকের বেপরোয়া চালনা, টায়ার ফেটে যাওয়া, বাস চালকের ক্লান্তি ও তন্দ্রাচ্ছন্নতা, ব্রিজের রেলিং ভেঙে নিচে পড়ে যাওয়া এবং যান্ত্রিক/ব্রেকের ত্রুটি, মধ্যম শ্রেণির লাইসেন্স নিয়ে ড্রাইভিং, পথচারীকে আঘাত, আনফিট বাস এবং ভেজা রাস্তা। প্রতিবেদনে রাস্তাসংলগ্ন সার্ভিস রোডের অনুপস্থিতির কথা উল্লেখ করে নিরাপত্তার ঘাটতি নিয়ে ড. শামসুল বলেন, ক্লিয়ার জোন বা মৃদু ঢাল না থাকা, রাস্তার অন্য প্রান্তের মতো দুর্ঘটনার প্রান্তে টানা গার্ড রেইল না থাকা, রাস্তা ও হার্ড শোল্ডারের মধ্যে উচ্চতার অসামঞ্জস্য ব্যবধান এবং ব্রিজের প্রান্ত ও রাস্তার মধ্যে উচ্চতার অসামঞ্জস্য ব্যবধান।

সড়কের বিশৃঙ্খলা দূর করতে পরামর্শ দিয়ে ড. শামসুল হক বলেন, উন্নত দেশে ট্রাক যদি তার লেন পরিবর্তন করে তাহলে পুলিশ ধরবে। ট্রাকের রুট বাম পাশে থাকলেও তারা ডান পাশে চলে আসে। ফলে ডান দিকে গিয়ে ওভারলেপিং করতে হয়। ওভারলেপিং করা যাবে না একই রুটে। এতে প্রতিযোগিতা হবে না ট্রিপ বেশি মারার জন্য। এতে চালকরা প্রতিযোগিতায় নামবে না। প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বললেও আমাদের চিন্তাভাবনা প্রাগৈতিহাসিক মন্তব্য করে অধ্যাপক শামসুল বলেন, রাস্তা উঁচু করা হচ্ছে কিন্তু কোনো রেলিং নেই। শুধু ব্রিজে দেওয়া হচ্ছে। মনে হয় এই পানিতে পড়লেই ক্ষতি হবে। টানা রেসিং দিতে হবে। বিদেশ থেকে আসা সড়ক পরামর্শকরা নিম্নমানের মন্তব্য করে তিনি বলেন, দায়সারা কাজ করে যায়। হাইওয়ে বানালে সেফটি ব্যারিয়ার দিচ্ছে না। এখানে শুধু চালকের দোষ নয়। উন্নত দেশে ব্যারিয়ার না দিলে শাস্তি হয়। শুধু চালক চালক করছি। অন্য কোথাও মনোযোগ নেই। দুর্ঘটনার কারণে কেউ যাবে না।

সর্বশেষ খবর