শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
সিটি ভোটে সরব প্রার্থীরা

লিটনের চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো মেয়র পদে ভোটের মাঠে নামছেন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ। খায়রুজ্জামান লিটনকে মনোনীত করায় রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগ উজ্জীবিত। তবে লিটনের সামনে এবার চ্যালেঞ্জ নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।  

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজ শুরু করছি। ২০১৮ সাল থেকে রাজশাহীতে ব্যাপক উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক কাজ করেছি। অনেক কাজ চলমান আছে। করোনার দুঃসময়ে মানুষকে দফায় দফায় খাদ্য, নগদ অর্থ, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা প্রদান করা হয়েছে। রাজশাহীর মানুষ তা মনে রাখলে নির্বাচনে জয় পাওয়া কঠিন কিছু হবে না। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পরিচ্ছন্ন-সবুজ নগরী গড়তে সক্ষম হয়েছি। দুবার পরিবেশ পদক অর্জন করেছি। ইপিআই কার্যক্রমে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের টানা ১১ বার জাতীয়ভাবে সেরা হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা, সবুজ ও আলোকায়নে আমরা দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছি। এখন আমাদের প্রয়োজন কর্মসংস্থান। এটিতে জোর দিতে চাই।

কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইতোমধ্যে বিসিক শিল্পনগরী-২ এর কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। সেখানে যাতে উদ্যোক্তারা কাজ শুরু করতে পারেন, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করা হবে। নারী উদ্যোক্তাদের এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিনা সুদে ঋণ প্রদান করা হবে। আগামী ৫ বছরে অন্তত ৫০ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মের ব্যবস্থা করে দিতে চাই। সেক্ষেত্রে আইটি সেক্টর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক বড় ভূমিকা পালন করবে।

রাজশাহীবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী তিলে তিলে তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত হয়েছে। আগামী পাঁচ বছর যদি আবারও সুযোগ পাওয়া যায়, তাহলে রাজশাহী শহরে উন্নয়ন করার মতো হয়তো আর জায়গা থাকবে না। সেক্ষেত্রে সিটি এলাকা সম্প্রসারিত করা হবে। যাতে সেই এলাকাগুলোর মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা যায়, উন্নয়ন করা যায়। সেটি বাস্তবায়িত হবে শুধু নির্বাচনে জয়ী হলে।

এবারের রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে ভিন্ন কৌশল। গতানুগতিক নির্বাচনী ধারা নেই। কারণ, এর আগের সব সিটি নির্বাচনেই বড় দল বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। ছিল জামায়াতও। কিন্তু এবার বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে না-এটা মোটামুটি নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের দলীয় মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের সামনে বড় কোনো বাধা থাকছে না। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভিন্ন কৌশলী হয়ে উঠতে পারে। লিটনকে ঠেকাতে তারা ডামি প্রার্থী দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দলীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। নৌকার টিকিট হাতে পেয়েই মাঠে নেমে পড়েছেন লিটন। আগেভাগেই মাঠ গোছানোর কাজে হাত দিয়েছেন। দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন কমিউনিটির সঙ্গে মতবিনিময় করছেন।

এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩৩২ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৩ সালের ১৫ জুনের সিটি নির্বাচনে আনারস প্রতীকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে বুলবুল ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৮ ভোট পেয়ে রাজশাহী সিটির মেয়র হন। এর আগে ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে হারিয়ে প্রথমবার রাজশাহী সিটি মেয়র নির্বাচিত হন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

সর্বশেষ খবর