শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

গরমে চা উৎপাদনে ভাটা

শঙ্কা বাড়ছে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

গরমে চা উৎপাদনে ভাটা

দাবদাহে চা উৎপাদনে ভাটা পড়েছে। নতুন কুঁড়ি আসছে না চা গাছে। তাই কাঁচা পাতা উত্তোলন সম্ভব হচ্ছে না। ক্ষতি হচ্ছে নতুন প্লান্টেশনের। হ্রাস পাচ্ছে মাটির উর্বরতা শক্তি। যার কারণে একটু অধিক বৃষ্টি বা বন্যা হলেই মাটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর মৌসুমের শুরুতেই চা শিল্প দাবদাহের মুখে পড়ায় কমে যাচ্ছে চা উৎপাদন। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চলমান দাবদাহ অব্যাহত থাকলে এর ব্যাপক বিরূপ প্রভাব পড়বে চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায়। লোডশেডিংয়ের কারণে গত বছরও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি চা শিল্প। দেশে মোট ১৬৭টি চা বাগান রয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় ৯২টি। বাংলাদেশ চা বোর্ড চলতি বছর দেশে চায়ের উৎপাদন ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি ধরে রেখেছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৩ লাখ ৬৪ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ ধরে শ্রীমঙ্গলে দাবদাহ চলছে। গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া মঙ্গলবার ছিল ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি, সোমবার ৩৭ ডিগ্রি, রবিবার ৩৮.৪ ডিগ্রি, শনিবার ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি, শুক্রবার ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জানা যায়, দেশের প্রতিটি চা বাগানে মার্চে নতুন পাতা উত্তোলন শুরু হয়। এ সময় প্রতিদিন বাগানে ১০-১৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়। গাছ যত বেশি পানি পায় তত বেশি সজীব হয়, তত বেশি পাতা দেয়। আর যদি নির্দিষ্ট পরিমাণের বৃষ্টি না হয় তাহলে গাছে নতুন পাতা আসবে না। অনেক বাগানে ডিজেলচালিত সেচ দিয়ে নতুন চারা গাছ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে পূর্ণবয়সী গাছের পাতা দাবদাহে জ্বলে যাচ্ছে। বাগান ব্যবস্থাপকরা জানান, মার্চের শুরুতে চা গাছ টিপিং করে দেওয়া হয়। সুন্দর করে সমান্তরাল সাজানো হয়। পরে পাতা উত্তোলন করা হয়। কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেটের প্রডাকশন ম্যানেজার মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় চা গাছে নতুন কুঁড়ি আসছে না। যার জন্য বাগানে টিপিং করা যাচ্ছে না। আর টিপিং করতে না পারায় পাতা উত্তোলন করা যাচ্ছে না। তাই কমে যাচ্ছে উৎপাদন। ফিনলে টি কোম্পানির চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. তাহসিন আহমেদ চৌধূরী বলেন, ‘এই সময়ে আমাদের প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লাখ কেজি কাঁচা চা পাতা বাগান থেকে উত্তোলন করা হতো। দাবদাহের কারণে এটা ১ লাখ কেজিতে নেমে এসেছে। এ খরা চলমান থাকলে পাতা উত্তোলন আরও নেমে আসবে। তখন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও ব্যাঘাত ঘটতে পরে।’ বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক বলেন, ‘দাবদাহে চায়ের কুঁড়ি বের হচ্ছে না। এতে উৎপাদন কমবে। তাই উৎপাদন ধরে রাখার জন্য বেশি করে সেচ দিতে হবে।’

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর