শনিবার, ৬ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরগরম সিটি নির্বাচনের মাঠ

ধাপে ধাপে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কথা বললেন খালেক

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

ধাপে ধাপে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কথা বললেন খালেক

তালুকদার খালেক

খুলনাকে ‘পরিচ্ছন্ন ও তিলোত্তমা নগরী’ হিসেবে গড়ে তুলতে চান আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। চলমান সড়ক-ড্রেনেজ উন্নয়নের মেগা প্রকল্প শেষ হলে আরও কী কী প্রয়োজন তা চিহ্নিত করবেন। এরপর ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন খালেক। অন্যদিকে নির্বাচিত হলে যানজট ও জলাবদ্ধতামুক্ত শহর গড়ে তুলতে চান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আবদুল আউয়াল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল গফ্ফার বিশ্বাস। আর পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে শতভাগ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতের কথা বলছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু, স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান মুশফিক এবং তরুণ নেতৃত্বের সংগঠন আগুয়ান-৭১ এর প্রার্থী মো. আবদুল্লাহ চৌধুরী। খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর এ পর্যন্ত মেয়র প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় এসেছেন ছয়জন। এর মধ্যে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক। ১০ দফা দাবিতে রাজপথে আন্দোলনে থাকা বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তফসিল অনুযায়ী ১২ জুন খুলনা সিটির ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

সিটি নির্বাচনে টানা চতুর্থবার মেয়র পদে ভোটের মাঠে নামছেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। তিনি বলেন, খুলনার সড়ক-ড্রেনেজ উন্নয়নে যেসব কাজ চলছে সেগুলো শেষ করা আমার প্রধান দায়িত্ব। এই কাজ শেষ হলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও কী কী প্রয়োজন তা ‘ফাইন্ড আউট’ করা হবে এবং এসব বাস্তবায়নের জন্য যা যা প্রয়োজন করা হবে।

তিনি বলেন, খুলনাকে আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। করোনা মহামারির কারণে উন্নয়ন কাজ কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও বর্তমানে দ্রুত কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন কাজে নগরবাসীর চলাচলে কিছুটা বিঘ্নের সৃষ্টি হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে মেয়র বলেন, চলমান কাজ সম্পন্ন হলে খুলনা একটি আধুনিক শহরে পরিণত হবে। খুলনার দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে যাবে। খুলনা পরিচ্ছন্ন ও তিলোত্তমা নগরী হবে। খুলনার উন্নয়নে নগরবাসীরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করলে খুলনা শহরকে কাক্সিক্ষত উন্নয়নের লক্ষ্যে নেওয়া সম্ভব হবে। জাতীয় পার্টি মনোনীত শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, উন্নয়নে বিভিন্ন সংস্থার কাজে সমন্বয় না থাকায় উন্নয়ন কাজ জনভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচিত হলে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে যানজটমুক্ত ও জলাবদ্ধতামুক্ত শহর গড়ে তুলব। একই সঙ্গে সুপেয় পানির সংকট নিরসন ও শিল্প নগরীর হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চেষ্টা করব। নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবদুল আউয়াল বলেন, বৃষ্টি হলে শহরজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ড্রেনগুলো বন্ধ থাকায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি উঠে যায়। নির্বাচিত হলে এই সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করব। এ ছাড়া যুবসমাজ মাদকাসক্তিতে নিমজ্জিত। এই যুবকদের মাদকাসক্তি থেকে পরিত্রাণ দিতে নৈতিকতা উন্নয়নের চেষ্টা করব। দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের বাইরে ভোটপ্রাপ্তিতে নতুন সমীকরণ গড়তে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক। ভোটের মাঠে বিএনপির প্রার্থী না থাকায় তাদের সমর্থক ভোটারদের কাছে টানতে চেষ্টা করছেন মুশফিক। তিনি বলেন, জনগণ একবারের জন্য মেয়র হিসেবে সুযোগ দিলে খুলনাকে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলব। সমন্বয়হীন অপরিকল্পিত উন্নয়ন কাজে রাস্তাঘাটে চলাচলের অবস্থা নেই। রাস্তা উঁচু করার ফলে কয়েক হাজার বাড়ি রাস্তার নিচে চলে গেছে। হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও জলাবদ্ধতার ভোগান্তি রয়েই গেছে। নির্বাচিত হলে শতভাগ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করব।

জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা ও সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল গফ্ফার বিশ্বাস বলেন, পরিকল্পিতভাবে খুলনা নগরী গড়ে উঠছে না। বৃষ্টি হলে পানিতে বাড়িঘর সয়লাব হয়ে যায়। কোনো কোনো স্থানে ৩/৪ দিন পর্যন্ত বৃষ্টির পানি জমে থাকে। নদী ভরাট হচ্ছে, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট উঁচু হচ্ছে আর মানুষের বাড়িঘর রাস্তার নিচে পড়ে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে ময়লা-আবর্জনা জমে দুর্গন্ধ ছড়ায়। দিন-রাতে মশার কামড় সহ্য করতে হয়। অভিযোগ করারও জায়গা নেই। অন্যদিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যে মানুষকে রাজনীতি সচেতন করতে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা জানান আগুয়ান-৭১ এর মেয়র প্রার্থী মো. আবদুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, খুলনা সিটি করপোরেশনের কাজগুলো পরিকল্পনামাফিক সাজিয়ে একটি পরিচ্ছন্ন ও নাগরিকবান্ধব নগর নগরবাসীকে উপহার দেওয়াই আমাদের অঙ্গীকার।

সর্বশেষ খবর