মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

দুর্যোগ এড়াতে ২০ মে’র মধ্যে ধান কাটার নির্দেশ

আকতারুজ্জামান

কালবৈশাখী ঝড়, জলোচ্ছ্বাস বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বোরো ধান রক্ষায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধান কাটা শেষ করতে বলেছে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এই নির্দেশনা পেয়ে সাত জেলার হাওর অঞ্চলে ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে ধান কাটা। অন্য এলাকাগুলোতেও ২০ মে’র মধ্যে ধান কাটার কাজ সম্পন্ন করতে বলেছে সরকার। জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) এই কর্মকান্ডের তদারকি করছেন। প্রয়োজনে কম্বাইন হারভেস্টার বা রিপার দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও বিভিন্ন জেলা প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরে দেশে ৪৯ লাখ ৭৬ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সরকারের তথ্য বলছে- এবার বোরো ধানের আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ কোটি ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল। হাওরভুক্ত জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এ বছর বোরো আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে। আর এই সাত জেলায় মোট বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এসব জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪০ লাখ টন চাল। দ্রুততম সময়ের মধ্যে হাওরের ধান কাটতে কৃষকদের পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে ৩ হাজার ৮০০ কম্বাইন হারভেস্টার ও ৬৭০টি রিপার।

জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বোরো ধান কাটতে সম্প্রতি একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা, হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা প্রশাসক, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ছাড়াও সংশ্লিষ্টরা এতে অংশ নেন। বৈঠক থেকে সারা দেশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাকা বোরো ধান কাটার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়। হাওর রয়েছে এমন জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয় সার্বিক সহযোগিতা ও তদারকি করতে। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী প্রতিবেদককে বলেন, ৫ মের মধ্যে হাওরের শতভাগ ধান কাটার নির্দেশনা ছিল, সে অনুযায়ী হাওরের ধান কাটা শেষ হয়েছে। এ ছাড়া হাওর নয়, এমন এলাকার ধান কাটতে ২০ মে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আশা করি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই জেলার ধান কাটা শেষ হবে। ইতোমধ্যেই এমন অঞ্চলের ৭৭ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি। হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, নির্দেশনা পেয়ে হাওরের ধান কাটা শেষ হয়েছে। তবে হাওরে দুর্গম এলাকায় খেতে এখনো কিছু ধান রয়েছে যেগুলো সংগ্রহে আগ্রহ নেই কৃষকদের। আর নন-হাওরে (হাওর নয় এমন এলাকা) মাত্র ৩০ শতাংশ ধান কাটার বাকি আছে। এই জেলার অধীন ১ লাখ ২২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ডিসি ইশরাত জাহান আরও বলেন, জেলার কোথাও শ্রমিকের সংকট থাকলে সেটি প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমন্বয়ের চেষ্টা করা হয়েছে। আবার কোথাও কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম জানান, বোরো ধান কাটার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যেই জেলার ৮৮ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই শতভাগ বোরো ধান কাটা শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ বলেন, ইতোমধ্যেই হাওরের ধান কাটা শেষ হয়েছে। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সারা দেশেই বোরো ধান কাটা শেষ করবে কৃষকরা।

সর্বশেষ খবর