বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
খুলনা

শেষ দিনে খালেক যা বললেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৬ মে মনোনয়নপত্র দাখিল ও ১২ জুন ভোট গ্রহণ। নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক। নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের আগেই আজ তিনি দায়িত্ব থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করছেন।

দায়িত্ব পালনে শেষ দিনেও তিনি উন্নয়ন প্রশ্নে ছিলেন আপসহীন। গতকাল সকালে নারকেলবাড়িয়া খাল কাটা দেখতে গিয়ে বিস্মিত হন। শহরের পানি যে জায়গা দিয়ে খালে নামবে সেখানকার জায়গার অস্তিত্ব নেই। নিষ্কাশনের পথ না রেখেই সামনে থেকে খাল কাটা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে সিটি মেয়র খাল কাটা কাজের বিল প্রদান আটকে দেন। তিনি বলেন, ‘খাল কাটা কাজে বিল আসার পর আমি সকালে নিজে সরেজমিনে তা দেখতে যাই। কিন্তু যে জায়গা দিয়ে পানি নামবে তা কাটা হয়নি। পানি নামার জায়গা না রেখে সামনে থেকে খাল কাটলে পানি নিষ্কাশন হবে না। কর্মকর্তাদের ওই বিল পরিশোধ না করার জন্য বলেছি।’ গতকাল তিনি নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলনে বিগত পাঁচ বছরে উন্নয়ন কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অবহিতকরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। তালুকদার আবদুল খালেক ২০০৮-১৩ ও ২০১৮-২৩ দুই মেয়াদে কেসিসির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ও ড্রেনেজব্যবস্থা উন্নয়নে সংস্কার কাজ চলছে। ৫৭১টি সড়ক উন্নয়ন কাজের ৪১৮টি সড়কের কাজ শেষ হয়েছে, চলমান আছে ১১৪টি। জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজব্যবস্থার উন্নয়নে ২০৬টি ড্রেন উন্নয়ন কাজের ৫২টির কাজ শেষ হয়েছে। চলমান আছে আরও ৮৫টি ড্রেনের কাজ। এসব উন্নয়ন কাজ শেষ হলে খুলনা আধুনিক সুযোগসুবিধাসংবলিত স্বাস্থ্যকর নগরীতে পরিণত হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিটি মেয়র বলেন, বিধিবহির্ভূত অধিকাংশ ড্রেনের সঙ্গে বাড়ির সীমানাপ্রাচীর তৈরি করা হয়েছে। শহরে যে ড্রেনে কাজ করতে গেছি ছয় মাসের জায়গায় এক বছর/দেড় বছর লেগেছে। ড্রেনে খোঁড়াখুঁড়ি করতে গেলে দেয়াল ধসে পড়েছে। সেসব বিষয় মীমাংসা করে নির্মাণ কাজে সময় ক্ষেপণ হয়েছে। তিনি বলেন, টুটপাড়া থেকে রায়মহল পর্যন্ত অপরিকল্পিত বাড়িঘর, রাস্তাঘাট তৈরি হয়েছে। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) হওয়ার পরও অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর তৈরি বন্ধ হয়নি। এসব কারণেও সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে রাস্তা ও ড্রেন উঁচু করায় কয়েক হাজার বাড়িঘর রাস্তার উচ্চতার তুলনায় নিচে পড়ে গেছে। এতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। এ প্রশ্নের জবাবে সিটি মেয়র বলেন, খুলনার পানির লেভেল উঁচু হয়ে গেছে। সরকারের নির্দেশ আছে বন্যা লেভেলের ওপরে বাড়ির ভিত দিতে হবে। প্ল্যানের নির্দিষ্ট মাপ অনুযায়ী রাস্তা-ড্রেন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কারও বাড়ি রাস্তা-ড্রেনের তুলনায় নিচু হয়ে থাকলে তাকেই নিজ দায়িত্বে উঁচু করতে হবে। সিটি মেয়র নগরীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজব্যবস্থা উন্নয়নসহ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, মাটির নিচে পানি সংরক্ষণে প্রাকৃতিক নদী, খাল জলাশয় সংরক্ষণ, নগরবাসীর চিত্তবিনোদন ও পরিবেশ রক্ষায় পার্ক, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন ও দূষিত পানি রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পুনর্ব্যবহার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বৃষ্টির পানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে নগরভিত্তিক টেকসই পানিচক্র প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলেন। সিটি মেয়র বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বাস্থ্যকর শহর গড়ে তুলতে বিশ্বের পাঁচটি শহর মনোনীত করেছে যার মধ্যে খুলনা একটি। ‘হেলদি সিটি’ প্রকল্পের মাধ্যমে খুলনাকে আধুনিক, স্মার্ট, সবুজ, স্বাস্থ্যকর শহরে পরিণত করা সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর