শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
তালগাছে কীটনাশক

সেই আওয়ামী লীগ নেতাকে জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজশাহীর বাগমারায় সরকারি সড়কের পাশে লাগানো অর্ধশত তালগাছ মারতে অভিনব কায়দায় কীটনাশক প্রয়োগের ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহরিয়ার আলমকে ৪ লাখ টাকা (খরচা হিসাবে) জরিমানা করেছেন হাই কোর্ট। একই সঙ্গে করখণ্ড দাখিল মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে থাকা এ নেতাকে সেই মাদরাসা থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে শাহরিয়ার আলমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. জাহিদুল হক জাহিদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী। সংশ্লিষ্ট দৈনিক পত্রিকার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী সাংবাদিকদের বলেন, আদালত আদেশে ৬০ দিনের মধ্যে এ টাকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে বলেছেন।

কৃষি কর্মকর্তা এ অর্থ দিয়ে যেসব তালগাছ জীবিত আছে সেগুলো পরিচর্যা করবেন। এ ছাড়া নতুন করে গাছ লাগাবেন। আর ৩০ দিনের মধ্যে শাহরিয়ার আলমকে করখণ্ড দাখিল মাদরাসার শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কার করতে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আদালত এ রায় ও আদেশ রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ বরাবর পাঠাতে বলেছেন, তারা যেন এ বিষয়ে তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। গত ৩১ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিক ‘৫০ তালগাছে কীটনাশক : দোষীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ কেন নয়’ শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় ছাপা হয়। ওই সম্পাদকীয় নজরে নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারিসহ শাহরিয়ার আলমকে হাই কোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেন। ওই আদেশ অনুসারে বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শাহরিয়ার আলম ১২ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হন। ওইদিন দুপুর পৌনে ১২টা থেকে (মধ্যাহ্ন বিরতি ছাড়া) বিকাল ৪টা পর্যন্ত আদালতের অভিপ্রায় অনুযায়ী তিনি দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ একটি প্রতিবেদন দেয়। স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলামের দেওয়া প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় মো. শাহরিয়ার নিজের রোপণ করা আমগাছের বেড়ে ওঠার প্রতিবন্ধকতা দূর করতেই তালগাছগুলোতে ক্ষত সৃষ্টি করে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মারার অপচেষ্টা করেছেন। তালগাছ রক্ষার্থে তার কোনো উদ্যোগ ও আন্তরিকতা পরিলক্ষিত ছিল না। তালগাছগুলোর ক্ষতি করার পেছনে তার ব্যক্তিগত স্বার্থ রয়েছে। এ ঘটনায় শাহরিয়ারের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।

সর্বশেষ খবর