শিরোনাম
রবিবার, ২১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষে রণক্ষেত্র

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) প্রথম বর্ষের গুচ্ছভিত্তিক ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুর পৌনে ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের সামনে এ সংঘর্ষ ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সূত্রপাত দুপুর ১২টায়। ভর্তি পরীক্ষা শুরুর পর মোটরসাইকেল রাখাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবুর অনুসারী মিনহাজুল প্রন্ত আর সাধারণ সম্পাদক নুরুল্লাহর অনুসারী সাব্বিরের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সভাপতির অনুসারীরা সাধারণ সম্পাদক অনুসারীদের গায়ে হাত তোলেন। পরীক্ষা শেষে পৌনে ২টার দিকে দুই গ্রুপ লাঠিসোঁটাসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে বঙ্গবন্ধু হলের সামনে সংঘর্ষে জড়ায়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। থেমে থেমে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা নাজমুল হোসেন বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগা নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। আমরা বিষয়টি নিয়ে বসেছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে কথা বলব।’ সদর থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ‘আমরা সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’

তবে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু। তিনি বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে সংঘর্ষ বাধে।’ সাধারণ সম্পাদক নুরুল্লাহ বলেন, ‘এটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। ঘটনার পর আমরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দুজনই ক্যাম্পাসে আসি। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। আশা করি এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে পাবিপ্রবি ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। তার জেরেই শনিবার (গতকাল) তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক পাবনা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও জেলা যুবলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপের কারণে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দেননি। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক পুলিশে খবর দিলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই পক্ষের সঙ্গে আমরা বসেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে। আমরা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে বৈঠক করেছি। তাদের কড়া সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) জিয়াউর রহমান বলেন, ‘ঘটনা শুনে আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছি। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপকে শান্ত করার চেষ্টা করছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’

 

সর্বশেষ খবর