সোমবার, ২২ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরগরম সিটি নির্বাচনের মাঠ

প্রচারে ব্যস্ত সব প্রার্থী

খুলনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

প্রচারে ব্যস্ত সব প্রার্থী

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরা ঘরোয়া বৈঠক, সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভায় ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক খুলনায় কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতা দূর করতে ‘সিটি গভর্নেন্স’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু গতকাল নির্বাচনী কৌশল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে নারী কর্র্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আবদুল আউয়াল ২৭, ২৮ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের জনসাধারণের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে নির্বাচিত হলে খাদ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, মৌলিক চাহিদা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন।

অন্যদিকে মনোনয়নপত্র যাচাইয়ে বাদ পড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম সফিকুর রহমান মুশফিক প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন। আপিল কর্তৃপক্ষ খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আগামীকাল এর শুনানি করবেন। তফসিল অনুযায়ী খুলনা সিটি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ মে, প্রতীক বরাদ্দ ২৬ মে ও ভোট গ্রহণ ১২ জুন। জানা যায়, খুলনা সিটি নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু না হওয়ায় ঘরোয়া বৈঠকে নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল নিয়ে প্রার্থীরা মতবিনিময় করছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার খালেক গতকাল খুলনায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বলেন, বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতায় উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। ‘সিটি গভর্নেন্স’ ব্যবস্থা চালু হলে ভোগান্তি দূর হবে। কেডিএ, ওয়াসা, বিদ্যুৎ, গ্যাস একেক সময় একেক প্রতিষ্ঠান রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে। এতে ভোগান্তি তৈরি হচ্ছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিটি নির্বাচনে ৬০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দলগত ও সামাজিকভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে নির্বাচনকে ভোট উৎসবে পরিণত করতে সাংগঠনিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তালুকদার আবদুল খালেক আরও বলেন, করোনার কারণে নির্মাণ ও সংস্কার কাজে আমরা দুই বছর পিছিয়ে গেছি। নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ঠিকাদাররা কাজ করতে ঢিলেমি করেছে। এ কারণে সময়মতো কাজ শেষ করা যায়নি। এসব বিষয়ও নজরদারিতে রয়েছে। তিনি বলেন, খুলনা সিটিতে ৮ হাজার ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অবৈধ গাড়ি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ট্রাফিক পুলিশের। কিন্তু তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। এদিকে নির্বাচিত হলে খাদ্য, সামাজিক নিরাপত্তাসহ মৌলিক অধিকার যথাযথভাবে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার  করেছেন হাতপাখার মেয়র প্রার্থী মাওলানা আবদুল আউয়াল। তিনি গতকাল জনসাধারণের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যারাই ক্ষমতায় এসেছেন সবাই জনগণের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিগত দিনে যারা মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন তারা নগরীর জনসাধারণের মৌলিক অধিকার যথাযথ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে খুলনা নগরীকে শান্তি ও সুখ-সমৃদ্ধিপূর্ণ নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সামাজিক নিরাপত্তা ও যাবতীয় মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণের চেষ্টা করব। জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু দলীয় কার্যালয়ে মতবিনিময়কালে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটির দায়িত্ব ও প্রচারণামূলক কর্মকা  নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি নেতা অ্যাডভোকেট মহানন্দা সরকার, এম হাদিউজ্জামান, আবদুল্লাহ আল মামুন। অন্যদিকে মনোনয়নপত্র যাচাইয়ে বাদ পড়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম সফিকুর রহমান মুশফিক জানান, প্রার্থিতা ফিরে পেতে তিনি এরই মধ্যে আপিল কর্তৃপক্ষ বরাবর আপিল করেছেন। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে ভোটের মাঠে তিনি ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন এলাকায় পাড়া-মহল্লায় ভোটাররা তাকে কাছে টেনে নিয়েছেন। তিনি বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে লড়াইয়ে আসতে পারেন- এ ধারণায় তাকে নানাভাবে কোণঠাসা করা হচ্ছে। জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে তালুকদার আবদুুল খালেক ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫১ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু পান ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট।

সর্বশেষ খবর