বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরগরম সিটি নির্বাচনের মাঠ

এজেন্ট নিয়ে দুশ্চিন্তায় খালেক মধু আউয়াল মুশফিকের উদ্বেগ

খুলনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

এজেন্ট নিয়ে দুশ্চিন্তায় খালেক মধু আউয়াল মুশফিকের উদ্বেগ

খুলনায় সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ১২ জুন। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের প্রচারণার সময় রয়েছে আর মাত্র ১০ দিন। ফলে জ্যৈষ্ঠের প্রচন্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে সকাল-সন্ধ্যায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ভোট পেতে দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক গতকাল নগরীর বড় বাজার ও শেরেবাংলা রোড এলাকায় গণসংযোগ ও আইনজীবী সমিতির হল রুমে ঠিকাদারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এর আগে তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তালুকদার খালেক বলেন, কেসিসি নির্বাচনে ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে ১৭৩২টি বুথ রয়েছে। মেয়র প্রার্থীদের প্রতিটি বুথে একজন করে নির্বাচনী এজেন্ট দিতে হবে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীদের অনেকে সব বুথে এজেন্ট দিতে পারবেন না। কিন্তু প্রতিটি বুথে আমার এজেন্ট থাকবে। নির্বাচনের দিন সাংবাদিকরা বুথে গিয়ে শুধু নৌকার এজেন্ট দেখলে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। এ কারণে দয়া করে মেয়র প্রার্থীরা সব বুথে এজেন্ট দেবেন। আমরা প্রশ্নের মুখে পড়তে চাই না। এ ছাড়া বড় বাজার ও শেরেবাংলা রোড এলাকায় গণসংযোগকালে তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে খুলনাকে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হবে। খুলনায় ১৫ তলা পাবলিক হল করা হবে। কয়েকটি ওয়ার্ডে কমিউনিটি সেন্টার, ওয়ার্ড অফিস নেই। প্রকল্পের মাধ্যমে এ অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা খুলনাকে হেলদি সিটি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিচ্ছন্ন ও তিলোত্তমা নগরী হবে খুলনা। তিনি আগামী ১২ জুন ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোটারদের পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে আহ্বান জানান। অন্যদিকে নির্বাচিত হলে নারী ও শিশুদের ন্যায্য অধিকার, মর্যাদা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাওলানা আবদুল আউয়াল। তিনি বলেন, খুলনায় মাদকের ভয়াবহ ছোবলে যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামের অনুশাসনের বিকল্প নেই। তিনি খুলনা সিটির সর্বস্তরে মানুষকে এ অবস্থা পরিবর্তনে হাতপাখা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। গতকাল তিনি খালিশপুর থানাধীন বিভিন্ন ওয়ার্ডে গণসংযোগকালে এসব কথা বলেন। আবদুল আউয়াল আরও বলেন, শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ও কন্যা শিশু লালন-পালনে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। মহিলাদের জন্য পৃথক লেডিস মার্কেট, মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়, মহিলা মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হবে। গণসংযোগে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় পার্টির মেযর প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু গতকাল নগরীর ৫ নম্বর ঘাট, ৭ নম্বর ঘাট ও ২৪ নং ওয়ার্ডের নিরালা এলাকায় গণসংযোগ পথসভা করেন। এ সময় তিনি পরিকল্পিত উন্নয়নের স্বার্থে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। শিল্পকলা একাডেমিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সংশয়ের কথা বলেন। তিনি বলেন জাতীয় নির্বাচন যদি ব্যালটে হয় তাহলে সিটি নির্বাচন ইভিএমে কেন। নির্বাচন কতখানি সুষ্ঠু হবে বা ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন কিনা এ নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ভোটাররা। তিনি বলেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা নিয়ম ভাঙলে তাদের বিরুদ্ধে কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে? একই মতবিনিময় সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক বলেন, নির্বাচন ঘিরে অনিয়ম মাত্রা ছাড়িয়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরকারি দলের অঙ্গসংগঠনের অফিসের মাধ্যমে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে। ভোটাররা শেষ পর্যন্ত প্রভাবমুক্ত থেকে ভোট দিতে পারবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। এ ছাড়া জাকের পার্টির প্রার্থী এসএম সাব্বির হোসেন ভোটারদের সচেতন করা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ৩১টি ওয়ার্ডে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ পদ্ধতি প্রদর্শনের আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর