বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
বাজেট ভাবনা

বারবার করকাঠামো পরিবর্তনে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়

শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম

আলী রিয়াজ

বারবার করকাঠামো পরিবর্তনে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেছেন, ‘ব্যবসায়ীরা চান স্থিতিশীল করকাঠামো। তাই সার্বিক বাজেট প্রণয়নে একটি স্থায়ী করকাঠামো মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। প্রতিবছর পরিবর্তন হলে ব্যবসা বা বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়। আমাদের অর্থনীতির আকার বাড়ছে। শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বৃহৎ প্রকল্পের দিকে যাচ্ছে। বিশ্ববাজারে আমাদের অবস্থান অনেক ওপরে উঠে এসেছে। তাই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো পদক্ষেপ যদি অনিশ্চয়তা তৈরি করে, তাহলে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েন। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে উদ্যোগ থাকা জরুরি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিদেশি বড় বড় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আসছে। আরও আসার আগ্রহ দেখিয়েছে। তাদের কাছে যেন কোনো ভুল তথ্য না যায় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত। বাংলাদেশ বিনিয়োগের যে পরিবেশ তৈরি করেছে, সেটি সব ব্যবসায়ীর কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার দায়িত্ব আমাদের।’ তিনি বলেন, আগামী বাজেটে সব বিনিয়োগকারীর জন্য উৎসাহব্যঞ্জক পদক্ষেপ থাকবে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক উদ্যোগ থাকবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, সার্বিকভাবে বাজেটে দেশের অগ্রগতির প্রতিফলন থাকতে হবে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ আর্থিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে, সেটি ধরে রাখার জন্য করব্যবস্থার বড় প্রভাব থাকে। বারবার করব্যবস্থায় পরিবর্তন করলে এক ধরনের অস্থিরতার আশঙ্কা থাকে। ব্যবসায়ীরা বা বিনিয়োগকারীরা স্বস্তিবোধ করেন না। তাদের সমস্যা হয়। স্থানীয় বিনিয়োগকারী বা বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সবাই স্থিতিশীলতা চান। তাই আমাদের অবশ্যই একটি স্থিতিশীলতা দরকার করব্যবস্থার ওপর। প্রায়ই দেখা যায়, কর পদ্ধতিতে নানা ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। বিনিয়োগকারীরা এতে আস্থা হারিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির আকার বাড়ছে। তিন থেকে সাড়ে তিন মিলিয়ন ব্যক্তি করজালের আওতায় আছেন। তারাই শুধু কর দেবেন এটা হয় না। তাদের ওপর কর বৃদ্ধি করা উচিত নয়। যারা করজালের বাইরে আছেন তাদের করজালের আওতায় আনতে হবে। বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের জন্য মঙ্গল হয় এটাই বাজেট প্রণয়নের প্রধান উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। করকাঠামোতে বড় পরিবর্তন না এনে বিনিয়োগে সুবিধা দেওয়া উচিত। শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আগামী বাজেটে শেয়ারবাজার সম্পর্কিত বিষয়ে বড় কোনো পরিবর্তন হোক তা আমরা চাই না। শেয়ারবাজার সহায়ক হতে পারে এমন পদক্ষেপ বা দিকনির্দেশনা থাকবে এবারের বাজেটে। এর মধ্যে বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ডিভিডেন্ড কর, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, বন্ডের বিষয়ে উৎসাহব্যঞ্জক উদ্যোগ থাকবে। তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের কাজ বাজারকে এগিয়ে নেওয়া। নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে সব সমস্যা সমাধান করে দেওয়া হয়েছে। বাজার ভালো হওয়ার জন্য যা যা দরকার ছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে সবকিছু করে দেওয়া হয়েছে। এখন আর কেউ বলতে পারবে না- এটা করা বাকি আছে, ওটা করা হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা নেই। শেয়ারবাজারের উন্নয়নে যত দাবি-দাওয়া ছিল, তা পূরণ করা হয়েছে। বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এখন বিনিয়োগকারীদের কাজ হচ্ছে বড় বড় বিনিয়োগ করে বাজারকে এগিয়ে নেওয়া। কেউ যদি কোনো সমস্যা নিয়ে আসেন তাহলে তা আমরা সমাধান করে দেব। আমি অনেকের কাছে জানতে চেয়েছি, বাজারে কোনো সমস্যা থাকলে বলেন, সমাধান করে দিই। বাজারে যত সমস্যা ছিল, সমাধান করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা এলে সেটিও সমাধান করে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর