রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
বরিশাল খুলনায় কাল ভোট

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দুই প্রার্থীর

বরিশাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দুই প্রার্থীর

বরিশাল সিটিতে রাত পোহালেই ভোট। শেষ দিনে গতকাল বিরামহীন প্রচারণায় ভোটারদের মন জয়ে সব রকম চেষ্টা ও নানামুখী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মেয়র প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত নতুন বরিশাল বিনির্মাণের অঙ্গীকারসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চেয়েছেন। তিনি সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে ভোটের প্রত্যাশা করেছেন। তবে অন্য মেয়র প্রার্থীরা সুুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। তারা অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের ভোটের পুনরাবৃত্তির পাঁয়তারা চলছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত বিরামহীন গণসংযোগ ও দফায় দফায় নির্বাচনী বৈঠক করেন। নগরীর নবগ্রাম রোডে গণসংযোগকালে খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, জনগণ মেয়র নির্বাচিত করলে তিনি নতুন বরিশাল বিনির্মাণ করবেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শুরু থেকেই ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন তিনি। জনগণ তাকে মেয়র নির্বাচিত করলে নতুন বরিশাল বিনির্মাণ করবেন তিনি। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তিনি নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস নগরীর ভাটারখাল এলাকায় গণসংযোগ করেন। তিনি বরিশালবাসীকে রক্ষায় লাঙ্গলে ভোট চেয়েছেন। তাপস গণমাধ্যমকে বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিপুল সংখ্যক বহিরাগত এনে নগরীতে জড়ো করেছেন। তারা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কমী-সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছে। বিভিন্ন বস্তিতে ভোটারদের অর্থ দিচ্ছে। বিশেষ দুটি গোয়েন্দা সংস্থা নৌকার পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করছে। তিনি ভোটে ২০১৮ সালের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করেন। ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম নগরীর হাটখোলা এলাকায় গণসংযোগ করেন। তিনিও সাংবাদিকদের কাছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে নগরীতে বহিরাগত এনে জড়ো করার অভিযোগ করেন। মুফতি ফয়জুল সব বাধা উপেক্ষা করে ভোটারদের হাতপাখাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন প্রেস ক্লাবে ৩০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন। নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনকে রাজনৈতিক প্রভাব এবং দুর্নীতিমুক্ত, হোল্ডিং ট্যাক্স পুনর্নির্ধারণ, মাতৃসদন হাসপাতাল আধুনিকায়ন, তরুণ-বেকারদের আইটি প্রশিক্ষণ, আইসিটি ও আউটসোর্সিং সহায়তা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযোদ্ধাদের হোল্ডিং ট্যাক্স ও পানির বিল মওকুফসহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রূপন বলেন, বিএনপির বহিষ্কার তার নির্বাচনে প্রভাব পড়বে না। বিএনপির অনেকেই তার সঙ্গে আছেন। তবে বিএনপির একটি অংশ আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছে, অভিযোগ করেন রূপন। জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু এবং দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন হাওলাদার ও মো. আসাদুজ্জামান প্রচারণায় ঘাম ঝরিয়েছেন। সিটি নির্বাচনে ৭ মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১১৯ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ৪২ জন। ইতোমধ্যে সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির।

বহিরাগতদের নগরী ত্যাগের নির্দেশ : মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দফতরে হলরুমে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, অনেকেই বাইরের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে প্রার্থীদের প্রচারণায় অংশ নিতে নগরীতে এসেছেন। রাত ১২টার পর কোনো বহিরাগত নগরীতে থাকতে পারবেন না। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। তল্লাশি করা হচ্ছে। কাউকে পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। নগরীতে বহিরাগত এনে জড়ো করা-সংক্রান্ত জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস এবং ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের অভিযোগ বিষয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুলিশ বদ্ধপরিকর। ভোট কেন্দ্রে কোনো পুলিশ সদস্য অতি উৎসাহ দেখালে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রিজাইডিং কর্মকর্তার চাহিদা ব্যতীত কোনো পুলিশ সদস্য ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবে না।

সর্বশেষ খবর