রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

সুপ্রিম কোর্টের টাস্কফোর্সের হাতে ধরা ভুয়া হলফকারী

আইনজীবী সহকারীর সদস্যপদ স্থগিত

আরাফাত মুন্না

সুপ্রিম কোর্টের টাস্কফোর্সের হাতে ধরা ভুয়া হলফকারী

অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে সুপ্রিম কোর্টের টাস্কফোর্সের অভিযানে ধরা পড়েছেন ফয়সাল আহমদ নামে এক ভুয়া হলফকারী। অপরিচিত ব্যক্তির পক্ষে হলফনামা দাখিল করতে গিয়ে ধরা পড়েন ফয়সাল। তবে ভবিষ্যতে এমন কাজ করবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তিনি। ঘটনার মূল হোতা আইনজীবী সহকারী মো. মাইনউদ্দিনের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট বিভাগের ফাইলিং শাখায় এ ঘটনা ঘটে, সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন সূত্র জানিয়েছেন। ভুয়া হলফকারী ফয়সাল আহমদ লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার রমাপুর গ্রামের মফিজ উল্যার ছেলে।

সূত্র জানায়, ফয়সাল আহমদ চাচাতো ভাইয়ের পক্ষে মামলার হলফনামা দাখিল করতে এসেছিলেন। তার কাজ শেষ হলে আইনজীবী সহকারী মো. মাইনউদ্দিন আরও একটি নথি দিয়ে হলফনামা দাখিল করতে বলেন।

ফয়সাল ওই নথি নিয়ে লাইনেও দাঁড়িয়েছিলেন। তবে ওই সময়ে ফাইলিং শাখায় ঝটিকা পরিদর্শনে যাওয়া হাই কোর্ট বিভাগে রেজিস্ট্রার (বিচার) এস কে এম তোফায়েল হাসানের কাছে সন্দেহজনক মনে হলে তিনি ফয়সালকে আটক করেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের টাস্কফোর্সের প্রধান হাই কোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (সার্বিক) আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকীর জিজ্ঞাসাবাদে দোষ স্বীকার করে ঘটনার বিস্তারিত জানান ফয়সাল। সুপ্রিম কোর্ট সূত্র আরও জানায়, ফয়সালের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আইনজীবী সহকারী মো. মাইনউদ্দিনকে আটক করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সহকারী সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সহকারী সমিতি জরুরি সভা ডেকে অনাকাক্সিক্ষত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা মো. মাইনউদ্দিনের সদস্যপদ এক মাসের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকে জানায়। আর ভবিষ্যতে এমন কাজ করবেন না মর্মে মুচলেকা নিয়ে মুক্তি দেওয়া হয় ফয়সালকে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, টাস্কফোর্সের সদস্যরা প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিভাগে অভিযান চালাচ্ছেন। তারা অনেক সফলতাও পেয়েছেন। এসব অভিযানে কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। জড়িত বিচারপ্রার্থীদের মুচলেকা নিয়ে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জড়িত আইনজীবী সহকারীদের বিরুদ্ধেও। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, হাই কোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার আলমগীর মোহাম্মদ ফারুকীকে প্রধান করে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তিন সদস্যের এই টাস্কফোর্সের অন্য দুই সদস্য হলেন- আপিল বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার এম এম মোর্শেদ এবং হাই কোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন আরও জানিয়েছে, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী টাস্কফোর্সের কার্যক্রম তদারক করছেন। সাপ্তাহিক ভিত্তিতে এবং জরুরি প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিক প্রধান বিচারপতিকে টাস্কফোর্সের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রাব্বানীও টাস্কফোর্সের কার্যক্রম মনিটরিং করেন। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে এই টাস্কফোর্স গঠনের পর থেকে সেবার মান বেড়েছে, দাবি সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের।

সর্বশেষ খবর