আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ১৯০ কিলোমিটার গতির ঝড়ো হাওয়ার শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি ধেয়ে যাচ্ছে ভারত-পাকিস্তান উপকূলের দিকে। ১৫ জুন দুপুরনাগাদ ‘বিপর্যয়’ গুজরাটের মান্দভি এবং পাকিস্তানের করাচির মাঝামাঝি ভারতের সৌরাষ্ট্র ও কুচ এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে এ সময়ে বাংলাদেশে কোনো ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আশঙ্কা নেই। উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে পড়ায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে সতর্ক সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এদিকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসায় দুই প্রতিবেশী দেশেই জারি করা হয়েছে সতর্কতা। ঝড়ের সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কায় উপকূলীয় এলাকায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বর্তমান গতিপথ ঠিক থাকলে ১৪ জুন সকাল পর্যন্ত ‘বিপর্যয়’ উত্তর দিকে অগ্রসর হবে। তারপর উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে ১৫ জুন দুপুরনাগাদ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকারে গুজরাটের মান্দভি এবং পাকিস্তানের করাচির মাঝামাঝি ভারতের সৌরাষ্ট্র ও কুচ এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। উপকূলে আঘাত হানার সময় ঝড়ের কেন্দ্রের কাছে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১২৫ থেকে ১৩৫ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আগামী পাঁচ দিন গুজরাটে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রঝড় হতে পারে। সাগর উত্তাল থাকায় জেলেদের নৌকা বা ট্রলার নিয়ে সাগরে যেতে নিষেধ করেছে ভারতের আবহাওয়া অফিস। আরব সাগরের তীরে গুজরাটের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র তিথল সৈকতে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আরব সাগরের তীরবর্তী বন্দরগুলোতে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। পাকিস্তান সরকারও সিন্ধু ও বালুচিস্তান প্রদেশে সতর্কতা জারি করেছে। দেশটির আবহাওয়া অফিস বলেছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সিন্ধু প্রদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব অংশে দমকা বজ্রঝড়ের সঙ্গে প্রবল বর্ষণ হতে পারে। সেই সঙ্গে উপকূলীয় নিচু এলাকা স্বাভাবিকের চেয়ে ৮ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। করাচি বন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। করাচির সৈকতগুলো বন্ধ করে দিয়ে সাগরে নৌকা ভ্রমণ, মাছ ধরা, স্নান বা সাঁতার কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আরব সাগরে সৃষ্ট একটি নিম্নচাপ গত ৬ জুন ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার নামের ক্রম অনুযায়ী এটির নাম হয় ‘বিপর্যয়’। নামটি বাংলাদেশের দেওয়া।