বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
বদলে যাওয়া জনপদ

কাশ্মীরি নারীদের লড়াকু জীবন

মুহাম্মদ সেলিম, কাশ্মীর (ভারত) থেকে ফিরে

কাশ্মীরি নারীদের লড়াকু জীবন

কাশ্মীর মানেই একসময় ছিল নিরাপত্তার কড়াকড়ি। রাস্তায় রাস্তায় ভারী সাঁজোয়া যান কিংবা কথায় কথায় হরতাল ও বন্ধ। আর নারীরা ছিলেন ঘরমুখো। সময়ের ব্যবধানে সবই পাল্টে যাচ্ছে কাশ্মীরের। এরই ধারাবাহিকতায় পাল্টে যাচ্ছে কাশ্মীরি নারীদের জীবন। তারা আত্মনির্ভরশীল এবং উদ্যোক্তা হতে নিচ্ছেন হাতে কলমে শিক্ষা। পরিবারের হাল ধরতে পুরুষের পাশাপাশি নামছেন ব্যবসায়। ফলে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার স্বপ্নের ডানা মেলছে কাশ্মীরি নারীদের।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভারত সরকারের দেওয়া তথ্যমতে, কাশ্মীরের ৬০ শতাংশের বেশির ভাগ গ্রামপঞ্চায়েতে নারীদের এসএইচজিসের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের আর্থিকভাবে স্বাধীন করার প্রচেষ্টা চলছে। কাশ্মীরে এ ধারণা জনপ্রিয় করার জন্য ভারতের অন্যান্য রাজ্যের এ প্রকল্পসংশ্লিষ্ট নারীদের কাজে লাগানো হচ্ছে। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট নারীরা গ্রামীণ এলাকায় ঘুরে এসএইচজিসে যোগদানের সুবিধাগুলো ব্যাখ্যা করছেন। শ্রীনগরের ঐতিহ্যবাহী পাইকারি বাজার লাল চকের একটি পাইকারি দোকানের সেলসগার্ল রোকসান আতিকা। তিনি বলেন, একসময় ঘর থেকে বের হতে পারতেন না কাশ্মীরি নারীরা। কিন্তু এখন সময় পাল্টে গেছে। নারীরা ঘর থেকে বের হচ্ছেন। আয় রোজগার করছেন। পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছেন পুরুষের মতো।  জানা যায়, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে কাশ্মীরের অর্থনৈতিক চাকা। পুরুষ কিংবা নারীদের জন্য বাড়ানো হয়েছে সরকারি সুযোগ-সুবিধা। রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে। বিশেষ করে নারীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কৃষি বিপণন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ব্র্যান্ডিং, দুগ্ধ ও হস্তশিল্পের ওপর জোর দেওয়া হয়। নারীদের আত্মনির্ভরশীল করতে সরকার চালু করেছে দ্য সেলফ হেল্প গ্রুপস (এসএইচজিস) নামে একটি প্রকল্প। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কাশ্মীরের বিভিন্ন গ্রামে ৫৬ হাজার এসএইচজিস চালু করা হয়। এসএইচজিসের আওতায় ৫ লাখের অধিক নারীকে যুক্ত করা হয়। প্রতি বছর ১১ থেকে ১৫ হাজার এসএইচজিস গঠনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ভারত সরকার। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। একই ভাবে বেসরকারি সংস্থাগুলোর উদ্যোগেও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শ্রীনগর বিমানবন্দরে কথা হয় মাহমুদা ওয়ানি নামে এক কাশ্মীরি নারীর সঙ্গে। তিনি জানান, ভারতের অন্য রাজ্যগুলোর নারীদের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন কাশ্মীরি নারীরা। এখন কাশ্মীরি নারীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে নারীর ক্ষমতায় ও শতভাগ আত্মনির্ভরশীল হতে সময় লাগবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর