শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাখিতে মুখর আফরা মাঠ

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

পাখিতে মুখর আফরা মাঠ

প্রচ- দাবদাহ রাজবাড়ীতে। আষাঢ়ের শুরুতে বৃষ্টির অপেক্ষায় প্রাণিকুল। সকালের সূর্য দুপুর গড়াতেই তাপ ছড়াচ্ছে। প্রকৃতির এমন রূপে রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের আফরা মাঠে দেখা মিলছে শত শত শামুকখোল পাখির। তাদের ওড়াউড়িতে চার পাশ মুখর হয়ে উঠছে। মাঠের এক পাশে উঁচু ভবন, অন্যপাশে বড় বাগান। আরেক প্রান্তে পাখিরা নিজেদের রাজ্য গড়ে তুলেছে। প্রতিদিন মানুষ আসছেন দেখার জন্য। রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে মাঠটি হওয়ার কারণে বিভিন্ন যানবাহন থেকে দেখা যায় পাখিগুলো।

শামুকখোল মূলত অতিথি পাখি। গ্রীষ্মকালে আমাদের দেশে এ পাখিগুলো আসত। আবাসিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় রাজবাড়ীতে শামুকখোল পাখি দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের হাওর-বাঁওড় এবং নদী এলাকায় শামুকখোল বাস করে। পাখিগুলো খুব নিরীহ। এরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে না। শামুকখোল বড় কলোনি তৈরি করে রাত্রিযাপন করে। শত শত মাইল উড়ে ভ্রমণ করে পাখিগুলো। এরা পানির ধারে, অল্প পানি অথবা অগভীর পানিতে হেঁটে হেঁটে কাদায় ঠোঁট দিয়ে খাবার খোঁজে। এদের খারাবের ৯০ ভাগই শামুক।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন হলো পাখিগুলো এখানে আসছে। শামুকখোলসহ ৪-৫ প্রজাতির পাখি হবে এখানে। বেশির ভাগ শামুকখোল। তবে তাদের সঙ্গে রয়েছে বেলে হাঁস, সাদা বক। এর আগে কোনোদিন পাখিগুলো দেখা যায়নি। এই মাঠে মূলত কাঁদাপানি রয়েছে। রাতে আফরা বাজারের পাশে বাগানে অবস্থান করে পাখিগুলো। মূলত ধান কাটার পর এই মাঠে জমে আছে। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির পোকামাকড়, শামুক থাকার কারণে পাখিগুলো এখানে অবস্থান করে। তবে পাখিগুলোর বেশির ভাগ বাইরের দেশ থেকে আসছে। হাজার হাজার পাখির মধ্যে দেশি প্রজাতির পাখিও রয়েছে।

গতকাল আফরার বিলে দেখা যায়, শত শত শামুকখোল প্রজাতির অতিথি পাখির মিলনমেলা আফরার বিলে। মনের আনন্দে কাঁদামাটির পানিতে দাপাদাপি। সেই সঙ্গে চলে পাখিদের খুনসুটি। আবার কখনো ডানা মেলে নীল আকাশে ওড়াওড়ি। এভাবেই দিনভর বিভিন্ন করসতে মেতে ওঠে তারা। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে আফরা বিল। বিলে শামুকখোল, বালি হাঁস, বক পাখির বিচরণ রয়েছে। রাস্তা থেকে পাখিগুলো দেখার জন্য ভিড় করছেন পাখিপ্রেমীরা। স্থানীয় প্রশাসন বলছেন, পাখিদের সুরক্ষা দিতে তারা কাজ করছেন। বিকালে পাখি দেখতে আসেন রাজবাড়ী পৌরসভার বাসিন্দা সোনালী সেন। তিনি বলেন, আমরা বিকালে ঘুরতে এসেছি এখানে। হঠাৎ দেখি শত শত পাখি বিলে বসে আছে। বক ছাড়া অন্য পাখিগুলো চিনি না। রাস্তা থেকে পাখিগুলো দেখলাম। এখানে এসে খুব ভালো লাগল। পাখির ডানা ঝাপটানো মুগ্ধ করছে আমার বাচ্চাদের। আমরা ফোনে ছবি তুলে নিয়েছি। রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. খায়ের উদ্দীন আহমেদ বলেন, পাখিগুলোর ব্যাপারে আপনার কাছ থেকে প্রথম জানতে পারলাম। পাখিগুলো বিলুপ্ত প্রজাতির পাখি হতে পারে। পাখি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। পাখিগুলোকে যেন আমরা বিরক্ত না করি। যদি কেউ পাখি শিকার করতে চায় তবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর