শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
নৌকার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ার চেষ্টা

উন্নয়ন প্রতিশ্রুতির ডালি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এখন চলছে প্রার্থীদের উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি তুলে ধরার পালা। যদিও এই নগরীতে একজন প্রার্থীই নির্বাচিত হলে রাজশাহীর উন্নয়নে কী কী করতে চান তা তুলে ধরছেন। তিনি হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

রাজশাহী মহানগরীর ১২ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ দুটি ওয়ার্ডে গণসংযোগ ও পথসভা করেন তিনি। সাহেববাজার বড় মসজিদে আসরের নামাজ আদায়ের পর সেখানে মুসল্লিদের সঙ্গে গণসংযোগ করেন। এরপর বড়কুঠি ক্যাম্পে গিয়ে পথসভায় বক্তব্য দেন মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর নগরীর মন্নুজান স্কুলের সামনে ও আলুপট্টি নদীর ধারা এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। পথসভাগুলোতে মানুষের ঢল নামে। পথসভায় বক্তৃতায় রাজশাহীর উন্নয়ন চলমান রাখতে ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। পথসভায় উপস্থিত জনসাধারণকে ইভিএম মেশিনে ভোট প্রদানের পদ্ধতি দেখিয়ে দেন তিনি।

পথসভায় মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘২০১৯ সালে রাজশাহীর উন্নয়নে ২৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পের অনুমোদনের পরপরই রাজশাহীসহ সারা বিশ্বে করোনা মহামারির সংক্রমণ দেখা দেয়। সব কাজে স্থবিরতা দেখা দেয়। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নির্মাণসামগ্রী ও ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে আড়াই বছর তেমন উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে যে অল্প সময় কাজ করতে পেরেছি এর উন্নয়ন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, প্রশস্ত সড়ক, আলোকায়ন, সড়ক বিভাজকে ফুলের বাগান ইত্যাদি অনেক উন্নয়নে দেশ-বিদেশে খ্যাতি অর্জন করেছে রাজশাহী। এ অর্জন ধরে রেখে রাজশাহীকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘রাজশাহীতে এবার দরকার কর্মসংস্থান। ইতোমধ্যে রাজশাহীতে বিসিক শিল্পনগরী-২ ও চামড়া শিল্প পার্ক অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিসিক-২ এর কাজ শেষ হয়েছে। বেলপুকুরে চামড়া শিল্প পার্ক হতে যাচ্ছে। এ দুই জায়গায় ঢাকা থেকে শিল্পপতিদের নিয়ে এসে শতাধিক শিল্পকারখানা করতে পারলে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আমি প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে হলেও বিত্তশালীদের রাজশাহীতে বিনিয়োগের জন্য নিয়ে আসব। আমি আপনার সন্তানদের কর্মের ব্যবস্থা করতে চাই। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করুন। যত বেশি ব্যবধানে আমাকে বিজয়ী করবেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে তত বেশি অর্থ বরাদ্দ এনে উন্নয়ন করতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘পদ্মা নদীকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করতে চাই। ভারতের মুর্শিবাদের ধূলিয়ান থেকে গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ হয়ে আরিচা পর্যন্ত নৌরুট চালু করতে চাই। এটি চালু হলে ভারত থেকে পাথর, ফ্লাই অ্যাশসহ প্রয়োজনী পণ্য আনা যাবে। রাজশাহীতে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করা যাবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অনেক কর্মসংস্থান হবে।’ খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘রাজশাহীতে তরুণ-তরুণীদের জন্য শহরে ১০টি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেখানে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণ নিয়ে তরুণ-তরুণীরা ঘরে বসে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। সেই কাজের ক্ষেত্রও আমরা দেখিয়ে দেব।’ পথসভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকার, জাসদ মহানগর সভাপতি আবদুল্লাহ-আল-মাসুদ শিবলী, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব) আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান কালু, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষসহ ওয়ার্ড ও মহল্লা কমিটির নেতারা। এদিকে বিকালে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় গণসংযোগ ও মিছিল করেছেন জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার। এ সময় তিনি রাজশাহীর উন্নয়নে গোলাপ ফুল প্রতীকে ভোট চান।

সর্বশেষ খবর