রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফুল ফল বাহারি গাছের মেলা

ওলী আহম্মেদ, শেকৃবি

ফুল ফল বাহারি গাছের মেলা

সপ্তাহ পেরোতেই জমে উঠেছে রাজধানীর জাতীয় বৃক্ষমেলা। পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে কয়েক শ প্রজাতির ফলদ, বনজ ও শোভাবর্ধক গাছের পাশাপাশি বাগান ব্যবস্থাপনা সামগ্রী ও উদ্ভিদজাত খাদ্যসামগ্রীর বাহারি পসরায় সেজেছে শতাধিক স্টল। কোথাও ঝুলছে দেশি-বিদেশি বিচিত্র ফল, কোথাও ফুটেছে হরেক রঙের ফুল। আছে শৌখিন বনসাই ও ক্যাকটাস। রকমারি গাছের এমন সমারোহে নয়নাভিরাম বৃক্ষমেলায় টানছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের।

বৃক্ষমেলার এবারের প্রতিপাদ্য ‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’। এ বছর সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ১২৪টি স্টল মেলায় স্থান পেয়েছে। শুরুর দিনগুলোতে রৌদ্র ও তাপপ্রবাহের প্রখরতায় মেলায় কেনাকাটা কম হলেও আষাঢ়ের শুরুতে ঝুম বৃষ্টির পর সতেজতায় প্রাণ এসেছে বৃক্ষমেলায়। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা।

গতকাল সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাত পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীর ঢল জমে বৃক্ষমেলায়। দুর্লভ গাছের সংগ্রহকারী গ্রিন স্পেস নার্সারির সাহেব আলী জানান, বৃষ্টির পরে বেচাকেনা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) প্রায় ১২০ প্রজাতির গাছকে দুর্লভ ও বিপণœপ্রায় বিবেচিত করেছে। তার মধ্যে বৈলাম, পার্সিয়ানের মতো ৭৫ প্রজাতির গাছ এখানে পাওয়া যাবে।

মেলায় দেশি জাতের চারা গাছের পাশাপাশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে বিদেশি বাহারি প্রজাতি। বিদেশি প্রজাতির আম গাছের ওপর নজর দিয়ে স্টল সাজানো বেলী গাডের্নের ইমন বলেন, বিদেশি আমের চারাগাছে ক্রেতার বেশ সাড়া পাচ্ছি। এসবের মধ্যে নামডক মাই, স্যামোআন একেকটি ২০ হাজার টাকা ও ব্রুনাই কিং ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিপ্লোমা নার্সারিতে বিদেশি গাছের মধ্যে রয়েছে আফ্রিকান কোকো চকলেট- দাম ১৫ হাজার, থাই নাশপাতি ও ফিলিপাইনের সানথুন ৩০ হাজার, জাপানের পার্সিমন ২০ হাজার ও থাই চিয়্যাংমাইয়ের দাম ৪০ হাজার টাকা। কয়েকটি স্টলে ২০০ থেকে শুরু করে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন টব, সার, কীটনাশকসহ বাগান পরিচর্যার নানান যন্ত্রপাতি। বাদাম, মধু, ওষুধি ফল, লতা ও আচারের স্টলও বসেছে।

বাড্ডা থেকে সপরিবারে মেলায় আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আনোয়ারুল হক বললেন, তীব্র তাপপ্রবাহ কমাতে ও ঢাকাকে বসবাস উপযোগী করতে বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই। এসেছি ছাদবাগান উপযোগী ও বেলকনি-বারান্দার কিছু শোভাবর্ধক গাছ কিনতে। গাছের দাম নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বললেন, মাত্র কয়েকটি স্টলে সরকার নির্ধারিত মূল্যে গাছ বিক্রি হচ্ছে, বাকিগুলোতে বেশ চড়া দামেই গাছ কিনতে হচ্ছে। সব স্টলে আয়োজক সংস্থা চারার মূল্য আগে থেকেই নির্ধারণ করে দিলে ক্রেতারা আরও স্বস্তি ও উৎসবমুখর পরিবেশে এসব গাছ কিনতে পারত। এবারে মেলায় ভিন্নতা আনা হয়েছে ব্রেস্টফিডিং কর্নার ও বিশ্রাম কক্ষ স্থাপনের মাধ্যমে। ৫ জুন থেকে শুরু হওয়া এ মেলার প্রথম পর্ব চলবে ২৬ জুন পর্যন্ত। ২৭ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি শেষে দ্বিতীয় পর্বে ১ জুলাই শুরু হয়ে ১২ জুলাই পর্দা নামবে জাতীয় বৃক্ষমেলার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর