রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

জটিলতা কাটছে নতুন তিন শ্রম আদালতে

স্থানান্তর করা হয়েছে ৭ হাজার মামলা দুর্ভোগ কমবে মালিক ও শ্রমিকদের

আরাফাত মুন্না

জটিলতা কাটতে শুরু করেছে নতুন তিন শ্রম আদালতে। এরই মধ্যে কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে গঠন করা এসব আদালতে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পাঁচ শ্রম আদালত থেকে স্থানান্তর করা হয়েছে ৭ হাজারের বেশি মামলা। কাঠামো অনুযায়ী প্রতি আদালতে ১৪ জন করে জনবল নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আর পৃথক দুই গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে ৩৬ জন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনীত করে। আইনজ্ঞরা বলেন, এ তিন আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের পথ আরও সুগম হলো। পাশাপাশি দুর্ভোগ কমবে মালিকদেরও।

জানা গেছে, তিনজন জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারক নিয়োগের মাধ্যমে গত ২ এপ্রিল এ তিন আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। শ্রম মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত এসব আদালতে শুধু বিচারক নিয়োগের দায়িত্বই আইন মন্ত্রণালয়ের। জনবলসহ নিয়োগসহ বাকি সব কাজই করবে শ্রম মন্ত্রণালয়। তবে বিচারক নিয়োগের পরও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় বিপাকে পড়েন বিচারকরা। পরে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে শ্রম মন্ত্রণালয়কে জনবল নিয়োগের পাশাপাশি মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনয়নে তাগিদ দেওয়া            হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩১ মে ১৮ জন শ্রমিক এবং ১ জুন ১৮ জন মালিক প্রতিনিধি মনোনয়নের গেজেট প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া প্রতিটি আদালতে শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে দুজন করে কর্মকর্তা প্রেষণে এবং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ছয়জন করে সহায়ক কর্মচারী নিয়োগ করা হয়। এখনো প্রতিটি আদালতে ছয়জন করে জনবলস্বল্পতা রয়েছে। শ্রম আদালতগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের ১০টি শ্রম আদালতে বিচারাধীন মোট মামলা ২৪ হাজার সাতটি। শ্রম আদালতের রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল নিষ্পত্তির জন্য গঠিত ঢাকায় একমাত্র শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ১ হাজার ৪৯৪টি। নতুন তিনটি ছাড়াও বর্তমানে ঢাকায় তিনটি, চট্টগ্রামে দুটি এবং রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও বরিশালে একটি করে শ্রম আদালত বিদ্যমান রয়েছে। এ ছাড়া দেশের একমাত্র শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল রয়েছে রাজধানীর কাকরাইলে। সূত্র জানায়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সম্প্রতি ৭ হাজার ৪৪টি মামলা নবগঠিত তিন আদালতে নিষ্পত্তির জন্য স্থানান্তর হয়েছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আদালতগুলোর কাঠামোতে প্রতিটি আদালতের জনবল ১৪ জন। আপাতত প্রেষণ ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে তিন আদালতে ২৪ জন নিয়োগ হয়েছে। মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি মনোনীত করার পর আইনি জটিলতা কেটেছে। তবে এ বিষয়ে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কয়েকজনকে নিয়োগ দেওয়ার পর জনবল সংকট কিছু কমেছে। তবে সংকট কাটেনি। আর আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া এসব কর্মচারীর আদালতের কার্যক্রম সম্পর্কে তেমন অভিজ্ঞতা নেই, আবার তাদের ওপর পুরো আস্থাও রাখা যায় না। তাছাড়া আদালতের কার্যক্রমও স্পর্শকাতর। ফলে নথি ব্যবস্থাপনাসহ সব কাজেই অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে। এ জন্য দ্রুত স্থায়ী জনবল নিয়োগ প্রয়োজন। জানতে চাইলে আইনজীবী ইমতিয়াজ আহমেদ কামাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নতুন করে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় তিনটি শ্রম আদালত গঠন করা হয়েছে। ফলে এসব এলাকার শ্রমিকদের দুর্ভোগ কিছুটা কমবে। নিজেদের ন্যায্য দাবি আদায়ে আগের মতো ঢাকা ও চট্টগ্রামে যেতে হবে না। তিনি বলেন, আদালতগুলো কাছাকাছি হওয়ায় দুর্ভোগ কমবে মালিকদেরও।

সর্বশেষ খবর