বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
মা ও নবজাতকের মৃত্যু

হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ চিকিৎসকের

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাহবুবা রহমান আঁখি ও তার নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. সংযুক্তা সাহা। গতকাল রাজধানীর পরীবাগে নিজের বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হাসপাতালের ওপর দায় চাপান।

ডা. সংযুক্তা বলেন, মাহবুবা রহমান আঁখিকে যখন ভর্তি করা হয়, তখন তিনি হাসপাতালে ছিলেন না। তাকে না জানিয়েই তার কথা বলে ওই রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস করেন, সেন্ট্রাল হসপিটাল আমার নাম ব্যবহার করে অনিয়ম করেছে। তারা এমন অনিয়ম করবে, আমি ভাবতেও পারিনি।’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আঁখিকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তির আগে আমার কাছ থেকে মৌখিক বা লিখিত কোনো ধরনের সম্মতি নেওয়া হয়নি। আঁখিকে হাসপাতালে ভর্তির সময় আমার উপস্থিতির ব্যাপারে হাসপাতাল মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছে আমি বাংলাদেশে আছি। যে মানুষটা দেশেই নেই, তার নাম করে কেন রোগী ভর্তি করবেন? এটা কার স্বার্থে? আমি যদি অপারেশন না করি, যদি নাই থাকি, তাহলে রোগী ভর্তি করালেন কোন আক্কেলে?’

এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে গত ১০ জুন আঁখিকে ভর্তির সময় আমার সঙ্গে নাকি যোগাযোগ করা হয়েছিল। আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, একটি হলেও প্রমাণ হাজির করুন। যদি আপনাদের কথা বিন্দুমাত্র সত্য হয়ে থাকে, আপনারা কল রেকর্ড হাজির করুন।’ সময় দিতে পারেন না রোগীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে আমি বিভাগীয় প্রধান ছিলাম। দূরত্বজনিত কারণে আমি প্রায়ই ক্লান্ত হয়ে পড়তাম। কেউ কেউ বলছেন আমি চাকরিচ্যুত। এটা কিন্তু অবজেকশনেবল কথা। আমি নিজে থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। মাঝখানে আমি ল্যাব এইড হাসপাতালে প্র্যাকটিস করতাম, ছেড়ে দিয়েছি। উত্তরায় ক্রিসেন্ট হাসপাতালে করতাম, দেখা গেছে যে সেখানে এক ঘণ্টাও ঠিকমতো সময় দিতে পারি না। কারণ আমার সেন্ট্রাল হাসপাতালে অনেক বেশি ব্যস্ততা থাকে। সেন্ট্রাল হাসপাতালে রোগীকে এক থেকে দুই মিনিট সময় দেই আসলে কথাটা ঠিক নয়। এত কম সময়ে রোগী দেখা যায় না। প্রথমে রোগীর হিস্ট্রি নেওয়া হয়, তারপর আমার সঙ্গে যারা পোস্টগ্র্যাজুয়েট চিকিৎসক থাকেন তারা শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করেন। সব পর্যালোচনা করার পর আমার কাছে ফাইল আসে, আমি রোগী দেখি। অন্তঃসত্ত্বা মাকে কিন্তু জুনিয়র দেখে না, আমি দেখি। এখন পর্যন্ত আমার অনুপস্থিতিতে কোনো মেডিকেল অফিসার সিজার করেনি।’ এর আগে গত সোমবার নবজাতকসহ মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় নিজেদের গাফিলতির কথা স্বীকার করেন সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আঁখির মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশও করে হাসপাতালটি। হাসপাতালের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর এ টি এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আঁখির চিকিৎসায় হাসপাতালের অবশ্যই গাফিলতি ছিল। গাফিলতি ছিল প্রথমত ডা. সংযুক্তা সাহার, তারপর ওটির চিকিৎসকদের, কারণ সে সময় তারা সিনিয়র ডাক্তারদের ডাকেননি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সাত কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে কমিটি।’

সর্বশেষ খবর