মঙ্গলবার, ২৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাঁচ স্ত্রী নিয়ে জাল নোটের কারবার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদুল আজহা সামনে রেখে গত দুই মাসে প্রায় ৫ কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়ে একটি চক্র। আরও ২ কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। এর আগেই চক্রটির নয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগ। এ চক্রের হোতা বাবুল মিয়া। তিনি তার পাঁচ স্ত্রীকে নিয়ে ওইসব জালনোট বাজারে ছেড়েছেন। গ্রেফতার অন্যরা হলেন- বাবুল মিয়ার স্ত্রী মিনারা খাতুন, মূল কারিগর সাইফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মিলি খাতুন, নারী কারিগর আলপনা আক্তার, ইব্রাহিম, আফাজুল ওরফে রাসেল, হাবিবুল্লাহ ও দুলাল হোসেন। রবিবার পুরান ঢাকার লালবাগের কাশ্মীর লেন থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকার জাল নোট জব্দ করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা কাশ্মীর লেনের একটি জাল টাকার কারখানার সন্ধান দেয়। তাদের দেখানো একটি ছয় তলা ভবনের ষষ্ঠ তলা এবং তৃতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকা তৈরির ওই কারখানার সন্ধান মেলে। সেখানে জাল টাকা তৈরির সময় কারখানার মালিক বাবুল মিয়া, তার স্ত্রী মিনারা খাতুন, মূল কারিগর সাইফুল ইসলাম, তার স্ত্রী মিলি খাতুন, নারী কারিগর আলপনা আক্তারকে হাতে নাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি টিনের ট্রাংকে রাখা ৮২ লাখ জাল টাকা জব্দ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘরোয়া কারখানা থেকে জাল টাকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, প্রিন্টার, জলছাপ যুক্ত বিশেষ কাগজ, বিভিন্ন রকমের মনোগ্রাম সংবলিত স্ক্রিন, ডাইস, বিভিন্ন রং, কাগজ কাটার যন্ত্র, কাঁচি, চাকুসহ প্রায় ২ কোটি জাল টাকা তৈরি করার উপযোগী সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। এ ছাড়া জাল টাকা দোকানে খুচরা বিক্রি করতে গিয়ে যে সমস্ত পণ্য সামগ্রী ক্রয় করা হয় তার মধ্য থেকে কিছু কম দামের শাড়ি, লুঙ্গি, গামছাও জব্দ করা হয়। মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, চক্রটির হোতা বাবুল এর আগে জাল টাকা নিয়ে পাঁচবার গ্রেফতার হন। তার স্ত্রী মিনারা খাতুন গ্রেফতার হন তিনবার এবং সাইফুল ইসলাম দুবার বিভিন্ন মেয়াদে জেল হাজতে ছিলেন। জামিনে মুক্তি পেতে তাদের লাখ লাখ টাকা খরচ হয়। উচ্চ সুদে ধার নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে আবারও তারা এই কাজে জড়িত হন। বাবুল মিয়া পাঁচটি বিয়ে করেন। পাঁচ স্ত্রীকে নিয়ে তিনি জাল নোটের ব্যবসা করতেন। চক্রটির আরও সদস্য রাজশাহী ও বরিশাল থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। ওইসব স্থানে তাদের জাল নোটের কারখানা আছে। চক্রের সদস্যরা ৫০০ টাকার ১ লাখ সমমূল্যের জাল নোট ১৬ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। আর এক হাজার টাকার ১ লাখ সমমূল্যের জাল নোট ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন।

 

সর্বশেষ খবর