বুধবার, ২৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

এবার ৮০০ কোটি টাকার চামড়ার বাজার

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

এবার ৮০০ কোটি টাকার চামড়ার বাজার

এবার কোরবানির ঈদে চামড়া কিনতে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা বাজারে ছেড়েছেন ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সারা দেশ থেকে চামড়া সংগ্রহ করে এনে ট্যানারিগুলোতে দেওয়ার জন্য আগেভাগেই মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মৌখিক চুক্তি করেছেন। দাম উন্মুক্ত রাখার জন্য কিছু ব্যবসায়ী চুক্তির বাইরেও রয়েছেন।

সূত্র জানায়, আসন্ন ঈদুল আজহায় এক কোটি পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে সাভারের শিল্প নগরীর ট্যানারিগুলোর। প্রায় দেড় শ ট্যানারি অতিরিক্ত লবণ কেমিক্যাল এবং প্রয়োজনীয় শ্রমিক নিয়ে প্রস্তুত রয়েছেন। কোরবানির পশু থেকে লবণযুক্ত চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মৌসুমি শ্রমিকদেরও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ট্যানারিগুলোতে। ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনে তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, লক্ষ্য অনুযায়ী কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করতে প্রায় ৮০৫ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।

ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াতউল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তারা এবার প্রায় এক কোটি পিস চামড়া সংগ্রহ করবেন। এর মধ্যে ৬৫ লাখ পিস গরুর চামড়া প্রতিটির গড়ে ১ হাজার টাকা, ৩০ লাখ পিস বকরি ও খাসি ও ভেড়ার চামড়া প্রতিটি গড়ে ১০০ টাকা দরে এবং প্রায় ৫ লাখ পিস মহিষের চামড়া প্রতিটি গড়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা দর ধরে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রেখেছেন তারা। এবার ঈদে ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা প্রতি বর্গফুট এবং ঢাকার বাইরে ৪৭ থেকে ৫২ টাকা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়া ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা দরে কিনতে হবে।

ট্যানারি মালিকরা জানান, গুণগত মান ভালো হলে তারা নির্ধারিত দরেই চামড়া কিনবেন। এ ছাড়া অতিরিক্ত চাপ সামলাতে ঢাকার বাইরের লবণযুক্ত চামড়া এক সপ্তাহ পর ঢাকায় প্রবেশের সুপারিশ জানিয়েছেন তারা। না হলে কাঁচা চামড়া নিয়ে বিশৃঙ্খলা শুরু হবে। অনেকেই লবণ ছাড়া কাঁচা চামড়া বিক্রির জন্য ঢাকায় এনে বিভিন্ন পয়েন্টে রেখে দেবে। এতে করে শুধু পরিবেশ দূষিত হবে তা নয়, চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রস্তুতির পাশাপাশি তিনটি বিষয়ে আমাদের শঙ্কা আছে। ভরা বর্ষায় ঈদ হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে চামড়া ছাড়ানোয় সমস্যা হলে এবং যথাযথ লবণ লাগাতে না পারলে চামড়া নষ্ট হয়ে যাবে। এ কারণে আমরা কোরবানির পশুর চামড়ায় যথাযথভাবে লবণ লাগানো এবং লবণযুক্ত চামড়া এক সপ্তাহ পর ঢাকায় প্রবেশের সুপারিশ জানিয়েছি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সারা দেশ থেকে সুষ্ঠুভাবে চামড়া প্রক্রিয়াজাত ও পরিবহন নিশ্চিত করতে দেশে ডিসি ও ইউএনওদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ট্যানারি মালিকদের সুপারিশে লবণ ছাড়া চামড়া পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ঈদের সাত দিন ঢাকার ভিতর ও ঢাকার বাইরে কাঁচা চামড়া পরিবহন না করা, নির্দিষ্ট সময় শেষে দেশের অভ্যন্তরে কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহনে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা না হয় সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন এবং কাঁচা চামড়া পাচার বন্ধে সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তদারকি বাড়াতে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর