রবিবার, ২ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে পুরনোর পাল্লা ভারী, বিএনপিতে একক

সাইফুল ইসলাম, যশোর

আওয়ামী লীগে পুরনোর পাল্লা ভারী, বিএনপিতে একক

যশোর-৬ (সদর) জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন। একসময় এখান থেকে বিএনপির তরিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের খালেদুর রহমান টিটো ও আলী রেজা রাজুর মতো ডাকসাইটে নেতা প্রার্থী হতেন। তারা এখন আর কেউ বেঁচে নেই। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী কাজী নাবিল আহমেদ বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য। এবারও তিনি মনোনয়ন চাইবেন। মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে তার পাল্লাই ভারী বলে মনে করা হচ্ছে। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন বিএনপির প্রয়াত নেতা তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। দলে তিনি একক প্রার্থী। ২০১৪ সালে কাজী নাবিল আহমেদ এ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বারের মতো তিনি নির্বাচিত হন। গত দুটি সংসদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এ আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু মনোনয়ন পান কাজী নাবিল আহমেদ। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে যশোর-৬ আসন শূন্য হলে উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন শাহীন চাকলাদার। ফলে এবারও ওই আসন থেকেই তিনি মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। সে ক্ষেত্রে যশোর-৩ আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ আবারও মনোনয়ন পেতে পারেন বলে অনেকেই মনে করছেন।

জানতে চাইলে কাজী নাবিল আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে সারা দেশের মতো যশোরেও ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। চলমান উন্নয়ন কর্মকা ঠিকঠাক মতো শেষ করতে আমি আবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইব।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘নেত্রী আমাকে একটি আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনেও তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই চূড়ান্ত’।

এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুলের নামও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে। তিনি বলেন, যশোর-৩, যশোর-৪ অথবা যশোর-৫-এর যে কোনো একটিতে আমি মনোনয়ন চাইব। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই চূড়ান্ত হিসেবে মেনে নেব।

বিএনপির প্রয়াত নেতা তরিকুল ইসলাম যত দিন বেঁচে ছিলেন, তত দিন যশোর-৩ সদর আসনে তিনি ছিলেন ‘অটো চয়েস’। গত সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি ইন্তেকাল করলে এ আসনে দলের মনোনয়ন পান তার ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত ইতোমধ্যেই দলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন। যশোর বিএনপিকে করেছেন ঐক্যবদ্ধ। পিতার মতো তিনিও যশোর-৩ আসনে ‘অটো চয়েস’ হতে যাচ্ছেন দলের অনেক নেতা-কর্মী মনে করছেন। তবে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘এখন দলের একমাত্র লক্ষ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করা। যে কোনো সময় নির্বাচন করার মতো প্রস্তুতি আমাদের আছে। তবে এখনই তা নিয়ে ভাবছি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় হওয়ার পর যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয় এবং দল নির্বাচনে অংশ নেয়, তখন মনোনয়ন চাওয়া-না চাওয়া নিয়ে ভাবা হবে। তিনি বলেন, যশোর-৩ আসনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুরো জেলার রাজনীতি এখন থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এ আসনে যাকে মনোনয়ন দেবেন, তাকে বিজয়ী করতে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছেন।

নির্বাচনের আগ মুহূর্তে জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রার্থী দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন আছে। তবে এসব দলের কোনো প্রার্থীকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে দেখা যাচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর