রবিবার, ২ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
শেরেবাংলা মেডিকেল

ছুটিতে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে পরিস্থিতি ভয়াবহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

ঈদুল আজহার চার দিনের সরকারি ছুটিতে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত একজনসহ ৫০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক ২০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঈদের আগের দিন। গত ৩০ জুন হাসপাতালে ২৭ জন ডেঙ্গু রোগীসহ চিকিৎসাধীন ছিলেন ১ হাজার ১৬৭ জন রোগী। গতকাল হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট দফতরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদে সরকারি ছুটির প্রথম দিন ২৭ জুন ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ওইদিন এই ১৩ জনসহ ৩০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩০ জনসহ ওই দিন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ১ হাজার ১৬৭ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। যার মধ্যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ১৫ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঈদের আগের দিন ২৮ জুন ৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয় হাসপাতালে। ওইদিন ৩০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ঈদের বন্ধে ২৮ জুন সর্বাধিক ১ হাজার ২০৫ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওইদিন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত সর্বাধিক ২০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঈদের দিন ২৯ জুন ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে সর্বোচ্চ ২৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিন সর্বোচ্চ ৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওইদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন ১ হাজার ৬৫ জন রোগী। এর মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত একজনসহ ১৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঈদের পরদিন ৩০ জুন নতুন ভর্তি হওয়া ১০ জনসহ মোট ২৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওইদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল মোট ১ হাজার ১৬৭ জন রোগী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ১২ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঈদের পরদিন। এদিকে ঈদের বন্ধের আগের তিন দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫২ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। ডেঙ্গু রোগী আগের চেয়ে বেড়েছে স্বীকার করে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, সাসপেক্টেড (সন্দেহজনক) ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যাদের ডেঙ্গুর লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে তাদের বেডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যাদের ডেঙ্গুর লক্ষণ নেই তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়ার সামর্থ্য মেডিকেল কর্তৃপক্ষের রয়েছে। ঈদের চার দিন বন্ধে ডেঙ্গু আক্রান্ত একজনসহ ৫০ জন রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে পরিচালক বলেন, ক্রিটিক্যাল (গুরুতর) রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকেন। ঈদের ছুটিতে হাসপাতালের সব ওয়ার্ডে রোস্টার (পালাক্রমে) ডিউটি পালন করেছেন চিকিৎসক-নার্সরা। কোন ওয়ার্ডে চিকিৎসায় গাফেলতি ছিল না। চিকিৎসকরা সাধ্য মতো চেষ্টা করেছেন। রোগীর চিকিৎসার সঙ্গে মৃত্যুর সম্পর্ক নেই। রোগী বেশি থাকলে মৃত্যুর হার বেশি হয়। কম রোগী চিকিৎসাধীন থাকলে রোগী মৃত্যুর হারও কমে যায়।

সর্বশেষ খবর