বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভাত বেশি খাওয়ার অভিযোগে গৃহকর্মীকে অমানবিক নির্যাতন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

১৩ বছরের কিশোরী জান্নাত। গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স শাহনাজ আক্তার সাবিহার বাসায়। ১ হাজার ৫০০ টাকা মাসিক বেতনে ওই বাসায় সে কাজ করছে প্রায় দেড় বছর ধরে। এই সময় জান্নাতের জন্য সাবিহার বাসা ছিল দোজখের মতো। ভাত বেশি খাওয়াসহ নানা অভিযোগ-অপবাদ দিয়ে জান্নাতকে অমানবিক নির্যাতন করতেন নার্স সাবিহা, তার স্বামী পলাশ মিয়া ও বোন রেহানা আক্তার রুমি। নির্যাতনের ঘটনায় গত সোমবার কোতোয়ালি থানায় মামলা হওয়ার পর থেকে গা ঢাকা দিয়ে আছেন সাবিহা ও তার পরিবারের অভিযুক্তরা। জান্নাত সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকার ছৈলাখেল গ্রামের মো. জাকির হোসেনের মেয়ে। জাকির হোসেন জানান, নার্স সাবিহার বাড়ি তার এলাকায়। ওই সুবাদে গত বছরের জানুয়ারি মাসে জান্নাতকে গৃহকর্মী হিসেবে সিলেট নগরীর নবাব রোডের ১৪২ নম্বর বাসায় নেন সাবিহা। এরপর থেকে জান্নাতকে প্রায় প্রতিদিনই নির্যাতন করতেন সাবিহা, তার স্বামী পলাশ ও বোন রুমি। ভাত বেশি খাওয়াসহ নানা অপবাদ দিয়ে তাকে মারধর করতেন। চুন থেকে পান খসলেই জান্নাতের ওপর নেমে আসত নির্যাতন। রান্নার কাজে ব্যবহৃত খুন্তি গরম করে জান্নাতের শরীরে ছ্যাঁকা দিতেন সাবিহা। এসব ঘটনা জানালে তাকে প্রাণে মারারও হুমকি দিতেন তারা। এই সময়ের মধ্যে জান্নাতকে বাড়িতে আসতে না দেওয়ায় এই নির্যাতনের খবর জানতেন না পরিবারের কেউই। গত ঈদুল আজহার সময় শাহনাজ আক্তার সাবিহা গ্রামের বাড়িতে যান। এ সময় তার সঙ্গে যায় জান্নাতও। সুযোগ পেয়ে জান্নাত তার বাড়িতে বেড়াতে গেলে, তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে অভিভাবকরা জিজ্ঞাসা করলে সে নির্যাতনের কথা জানায়। কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, ‘ওই গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তার শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে অভিযুক্তদের খুঁজছে পুলিশ। তারা পলাতক রয়েছেন।’ অভিযুক্ত শাহনাজ আক্তার সাবিহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর