বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

সেপ্টেম্বরে পদ্মায় চলবে ট্রেন

♦ মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে ৯৬ শতাংশ কাজ শেষ, ঢাকা-মাওয়া অংশে শেষ হয়েছে ৮৩ শতাংশ ♦ চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি

আকতারুজ্জামান

সেপ্টেম্বরে পদ্মায় চলবে ট্রেন

আগামী সেপ্টেম্বরেই পদ্মা সেতুর ওপর চলবে রেল। ওপরে সড়কপথ, নিচে রেলপথ- দ্বিতল বিশিষ্ট পদ্মা সেতু এভাবেই তৈরি করবে আরেক নতুন ইতিহাস। রেল চলাচল চালুর কার্যক্রম এগিয়ে চলছে জোরেশোরেই। ইতোমধ্যে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশে ৯৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আর ঢাকা থেকে মাওয়া অংশে সম্পন্ন হয়েছে ৮৩ শতাংশ কাজ। বাকি অংশের নির্মাণকাজ ও শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে এখন। রেলপথ মন্ত্রণালয়, রেলসংযোগ প্রকল্পসহ বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্যমতে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পে থাকছে মোট ১০টি রেলস্টেশন। প্রকল্পের একটি স্টেশনের লোকাল স্টাফ জানান, রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত রেললাইনের ওপর স্লিপার স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এই সেকশনে রেল ট্রায়াল দেওয়াও শেষ হয়েছে। শেষ হয়েছে ইলেকট্রিক্যাল সাবস্টেশন স্থাপন, ডরমেটরি স্থাপন, স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ। বর্তমানে এই সেকশনে কার্পেটিং, পেইন্টিং ও সিগন্যালিংয়ের কাজ চলছে। এ ছাড়া প্লাম্বিং ও শেড ফিনিশিংয়ের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সিগন্যালের মনিটর বসানোর কাজও বাদ রয়েছে। ঢাকা থেকে গেন্ডারিয়া পর্যন্ত নাগরিক সুবিধা (গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য) প্রদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কিছু কাজ করতে হবে। এখানে কিছু সময় লেগে যাবে। আর মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলওয়ে ট্র্যাকলাইন স্থাপন শেষ হয়েছে। এই অংশে সিগন্যালে মনিটর বসানো, স্টেশন এরিয়াতে কার্পেটিংসহ কিছু কাজও বাকি রয়েছে। জানা গেছে, মূল পদ্মা ব্রিজে ৩০ কিলোমিটার এলাকায় কোনো পাথর থাকবে না, এসব এলাকায় ভায়াডাক্টের ওপর রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। বাকি অংশে পাথর থাকবে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে মাওয়া অংশে ৩৯ দশমিক ৬৩ কিলোমিটারে ১৫টি ব্রিজ স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এখানে ১৬৮টি ছোটখাটো ব্রিজ ও কালভার্ট রয়েছে। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশে ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটারের পুরোটাই প্রস্তুত করা হয়েছে। এ অংশে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে ১৩টি। বর্তমানে স্টেশন ইয়ার্ডে লাইন স্থাপন, সিগন্যালিং কার্যক্রম, স্টেশন তৈরির কাজও শেষ পর্যায়ে। পদ্মা রেল সেতু প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের সহকারী প্রকৌশলী শাদমান শাহরিয়ার প্রতিবেদককে বলেন, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশে রেলসংযোগ প্রকল্পের বর্তমান অগ্রগতি ৯৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। আমরা আগামী সেপ্টেম্বরে রেল চলাচল শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব। পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসাইন দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে এর আগে তিনি প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা অংশে পদ্মা সেতুর ওপর রেললাইন স্থাপন এ প্রকল্পের মূল চ্যালেঞ্জ ছিল। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই লাইন স্থাপন করা হয়েছে। আগস্টেই সব কার্যক্রম শেষ করা হবে। আগামী সেপ্টেম্বরে রেল চলাচল শুরু হবে। সূত্র জানায়, পদ্মার মূল রেল সেতুর ওপর ট্রায়াল ট্রেন পরিচালনা করা হয় গত এপ্রিলে। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত সেতু অতিক্রম করে এই ট্রায়াল ট্রেন উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী  মো. নুরুল ইসলাম সুজন। যশোর পর্যন্ত রেলসংযোগ প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারিত রয়েছে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ অংশের কাজ শেষ করতেও কার্যক্রম চলছে জোরেশোরে। গত ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে আগামী বছরের ৩০ জুন।

সর্বশেষ খবর