সোমবার, ১০ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভোটের আগে নতুন দল

► নিবন্ধন চূড়ান্ত হবে মধ্য জুলাইয়ে ► নিবন্ধনের আগেই জোট নিয়ে চলছে তৎপরতা

গোলাম রাব্বানী

ভোটের আগে নতুন দল

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নতুন দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করবে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে ইসির প্রাথমিক তালিকায় ১২টি দল থাকলেও চার-পাঁচটি দলের বিষয়ে ফের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও সঠিক তথ্য যাচাইয়ের কাজ করছে ইসি। বাছাইয়ে উতরে গেলে শেষ ধাপে নিবন্ধন সার্টিফিকেট পাবে সংশ্লিষ্ট দল; যা গেজেট আকারে প্রকাশ হবে। বাছাইয়ে টিকে গেলেও গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে সংশ্লিষ্ট দলের বিষয়ে কারও আপত্তি আছে কিনা তাও যাচাই করতে হবে কমিশনকে।

নতুন দল নিবন্ধনে নির্বাচন কমিশন এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ শুরু করলেও কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে ভোটের অন্তত ছয় মাস আগে চলতি মাসের মধ্যে নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করার কথা বলেছে ইসি। এদিকে নিবন্ধন পাওয়ার আগেই দলগুলো বিভিন্ন জোটে যাওয়ার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে নতুন দলগুলো বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনাও করছে।

২০২২ সালের মে মাসে নতুন দলের নিবন্ধন আবেদন চায় ইসি। তিন মাসের সময় দিলেও তাতে সাড়া না পেয়ে অক্টোবর পর্যন্ত সময় বাড়ায়। নভেম্বরে প্রাথমিক পর্যালোচনা শুরু করে এবং এপ্রিল মাসে মাঠ পর্যায়ে তদন্তে যায়। দুই মাস ধরে তদন্ত করেও কাজ শেষ করতে পারেনি। সেই সঙ্গে নিবন্ধিত দলগুলোরও শর্ত প্রতিপালন করছে কিনা তা যাচাইয়ের কথা ছিল ইসির। তাও করতে পারেনি কমিশন।

এবার নিবন্ধন পেতে শতাধিক দল আবেদন করে। প্রাথমিক বাছাই ও দলিলাদি পর্যালোচনার পর ৮১টি দলের আবেদন বাদ পড়ে। মাঠ পর্যায়ে তদন্তের জন্য রয়েছে ১২টি দল। এক ডজন দলের তদন্ত প্রতিবেদন শেষে জুনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া শেষ করতে আরও ১৫ দিনের মতো সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে ইসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার ইসির বাছাই কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা প্রায় সব কিছু গুছিয়ে এনেছি। ১২টি দলের কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলা কমিটি-অফিস, সমর্থন তালিকা, প্রয়োজনীয় দলিলাদি মাঠ পর্যায়ে তদন্ত শেষ হয়েছে। এদের মধ্যে চার-পাঁচটি দলের বিষয়ে ফের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও সঠিক তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে। এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেলে কমিশনের কাছে উপস্থাপন সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। যোগ্য কোনো দল থাকলে নিবন্ধন পাবে বা নিবন্ধনের অযোগ্য হলে তা মধ্য জুলাইয়ে চূড়ান্তভাবে জানানো সম্ভব বলে উল্লেখ করেন এ কর্মকর্তা।

যেসব দলের তথ্য যাচাই : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি), বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি-বিএসপি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনোরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি)।

নবম সংসদ নির্বাচনে দলের নিবন্ধন প্রথা চালুর পর ৩৯টি দল নিবন্ধন পায়। এরপর দশম সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দলের নিবন্ধন দেওয়া হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে কোনো দল পায়নি। ইসির   বাছাই প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন না পেলেও আদালতের আদেশে নিবন্ধন অব্যাহত রয়েছে। তবে নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় ও আদালতের আদেশে এ পর্যন্ত ৫টি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। বর্তমানে ইসির কাছে নিবন্ধিত দল দাঁড়িয়েছে ৪২। সবশেষ আদালতের আদেশে নিবন্ধন পেল বাংলাদেশ জাসদ। নিবন্ধিত দলগুলোই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। এর বাইরে প্রার্থী হতে হলে নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে। এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কথা রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর