দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম, বগুড়া, সিরাজগঞ্জে নদনদীর পানি বাড়ছে। কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার এবং বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বাড়ছে। সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরবর্তী মানুষের। ভাঙনরোধে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন পাউবো কর্মকর্তারা। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা এসব খবর পাঠিয়েছেন-
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে দুই দিন ধরে সব নদনদীর পানি বাড়ছে। গতকাল বিকাল ৩টায় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ব্রহ্মপুত্র নদের দুটি পয়েন্টে ও ধরলা নদীর একটি পয়েন্টে পানি বাড়ছে। তবে তিস্তা ও দুধকুমার নদে পানি কমতে শুরু করেছে। নদনদীর অববাহিকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদনদীর তীরবর্তী ও চরের বাসিন্দারা দ্বিতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা করছেন।
সিরাজগঞ্জ : যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল। পানি বাড়ার সঙ্গে যমুনা নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, জালালপুর ইউনিয়ন, এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম, চৌহালীর খাসপুকুরিয়া ইউপির ভূতের মোড়, বাঘুটিয়া, ওমারপুর, বেলকুচি এবং কাজিপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। দেড় মাসে এসব অঞ্চলের ৩ সহস্রাধিক বসতভিটা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়েছে। শাহজাদপুরের পাঁচিল গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, রহিমা খাতুন, শরিফুল ইসলাম ও শুকুর ফকির জানান, দুই দিন আগেও বসতভিটা ছিল। হঠাৎ বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। যাওয়ার জায়গা না থাকায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছি। বসতঘর তোলার জায়গা না থাকায় ঘরগুলো ওয়াপদা বাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে স্তূপ করে রেখেছি। ঝড়বৃষ্টি ও রোদে পুড়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। এত কষ্টে থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি। চৌহালীর বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম জানান, ভাঙনে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি। সরকার বা জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন কেউ আমাদের সহযোগিতা করছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার নদীতীর রক্ষায় বিপুল অর্থ বরাদ্দ দিলেও পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে নদী ভাঙছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রণজিৎ কুমার সরকার জানান, যমুনার পানি বাড়ায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। এত বড় এরিয়ায় ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার সামর্থ্য পাউবোর নেই। যেখানে বেশি ভাঙছে, সেখানে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চলছে।বগুড়া : বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি সারিয়াকান্দি মথুরাপাড়া পয়েন্টে আবারও বাড়তে শুরু করেছে। শুক্রবার থেকে পানি কমতে শুরু করেছিল। তবে রবিবার থেকে পানি আবারও বাড়ছে। রবিবার সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা হয় ১৪.৯৪ মিটার এবং বিকাল ৩টায় ১৪.৯৮ মিটার। গতকাল বিকাল ৩টা পর্যন্ত যমুনার পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়েছে।