রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

পুরো খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে

-------- মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন

পুরো খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে

বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলডিএ) মহাসচিব মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন বলেছেন, আবাসন খাতের ওপর নতুন করে উৎসে কর আরোপ করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এর মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় ও বাস্তবতাবিবর্জিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে পুরো আবাসন খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, আমাদের অর্থনৈতিক সংকট আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, উন্নত আবাসনব্যবস্থা একটি জাতির সভ্যতার মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হয়। আবাসনশিল্প আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির চালিকাশক্তি। একটি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে আবাসনশিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। ভূমি রেজিস্ট্রেশনের ওপর কর বৃদ্ধির ফলে দেশে বিনিয়োগের সুযোগ নষ্ট হবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন বলেন, জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের ওপর কর আরোপের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। অর্থনীতিতে আবাসনশিল্পের অবদান ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ। এ অবদানে বড় রকম আঘাত করবে কর বৃদ্ধি। প্রবাসীরা আবাসনশিল্পে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করে থাকেন। তাদের বিনিয়োগের একটি আস্থার খাত আবাসনশিল্প। তারা এখন বিনিয়োগ করতে চাইবেন না। একদিকে খরচ বেড়ে যাবে, অন্যদিকে তাদের আস্থা নষ্ট হবে। সে ক্ষেত্রে প্রবাসীদের বিনিয়োগের অর্থ দেশে আসবে না। তিনি বলেন, আবাসনশিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে ২৬৯টি উপশিল্প খাত জড়িত। অর্থনৈতিক উন্নয়নের যোগসূত্রে ১৪টি শিল্পের মধ্যে আবাসন খাত তৃতীয়। আবাসনশিল্পের সঙ্গে ১২ হাজার ৫০০ উপখাত রয়েছে। এসব খাতে ২৫ থেকে ৩০ লাখ লোকের জীবিকা জড়িত। কিন্তু বর্তমানে আবাসনশিল্প খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপখাতগুলোর উৎপাদনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। উৎপাদন শিল্পে স্থবিরতা দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে। প্রবাসীরাও বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছেন না। অবাস্তব সিদ্ধান্তের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের অর্থনীতি। বিএলডিএ মহাসচিব বলেন, সরকার যে কারণে কর বৃদ্ধি করেছে সেই উদ্দেশ্য সফল হবে না। সরকার আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে আবাসন বা ভূমিকর বৃদ্ধি করেছে। এখন কেনাবেচা যদি কমে যায় কর আয় বাড়বে না। কর আয় বরং কমে যাবে উল্লেখযোগ্য হারে। আবাসন ব্যবসার সঙ্গে কয়েক হাজার শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এ খাতে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। উৎসে করসহ অন্যান্য কর কমানো না হলে ১০ হাজার শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে এবং ১ কোটি মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। যারা অসময়ে এ কর বৃদ্ধির চিন্তা করেছেন তাদের বৈশ্বিক অর্থনীতি নিয়ে কোনো ধারণা নেই। তাদের কোনো স্টাডি নেই। দেশের অর্থনীতি নিয়েও তাদের কোনো ধারণা নেই। আমাদের এ অর্থনৈতিক নানামুখী সংকটের সময় এভাবে উৎসে কর চাপিয়ে দেওয়া দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার শামিল। আমরা এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানাই।

সর্বশেষ খবর